ভেনগার্ড ডেস্ক
নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
বৈশ্বিক আইনের শাসন সূচকে ২০১৯ সালের তুলনায় বিদায়ী বছরে তিন ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ ১১৫তম অবস্থানে রয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া করোনাকালেও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা অব্যাহত ছিল।
বৃহস্পতিবার ২০২০ সালে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৮৮ জন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ ও গুমের ঘটনাও ঘটে।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৬২৭ নারী। ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৩ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন। ২০১৯ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ১ হাজার ৪১৩ নারী এবং ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২।
আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির এবং সহকারী সমন্বয়কারী অনির্বাণ সাহা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ সময় মানবাধিকার সুরক্ষায় ১০ দফা সুপারিশসহ মতামত তুলে ধরেন আসকের নির্বাহী কমিটির মহাসচিব নূর খান এবং নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, টেকনাফের মেরিন ড্রাইভে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলমান প্রশ্ন আবার সামনে উঠে এসেছে। সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা কম হলেও বছরজুড়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে, বিশেষ করে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অনেক ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নির্যাতন ও গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বছরজুড়ে। এ বছর ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ৪২ জন এবং শারীরিক নির্যাতনে ৭ জনসহ মোট ৪৯ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আসকের সুপারিশে বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও তথ্য কমিশনকে কার্যকর করতে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।
আসক বলছে, ২০২০ সালে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছেন ২০১ নারী। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন ১০৬ পুরুষ। উত্ত্যক্তকরণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ নারী। এ ছাড়া যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ নারী, ১১ পুরুষসহ খুন হয়েছেন ১৪ জন।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৩০টি মামলা হয়েছে এবং এসব মামলায় ২৭১ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া ভিন্নমতের প্রতি হুমকি, হামলা ও ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
সূত্রঃ samakal.com