সিএইচটি ভ্যানগার্ড, লামা
বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের সাঙ্গু মৌজায় সেটেলার বাঙালি কর্তৃক জুম্মদের ভূমি বেদখলের চেষ্টার প্রতিবাদে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুন ২০২৩) লামা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন করেন দুর্গম পাহাড়ি রাজা ও গতিরাম পাড়ার লোকজন। এতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. গিয়াস উদ্দিন ও আওয়ামী লীগের ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন মামুনের বিরুদ্ধে ভূমি বেদখলের অভিযোগ করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগী হরি চন্দ্র ত্রিপুরা, ক্যচিং ম্রো, বলি চন্দ্র ত্রিপুরা সহ পাড়া কারবারী কিষ্টরাং ত্রিপুরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গতিরাম পাড়ার বাসিন্দা হরি চন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে চন্দ্র মনি ত্রিপুরা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০৪ সালে হরি চন্দ্র ত্রিপুরা হেডম্যান রিপোর্ট মূলে দুই একর প্রথম শ্রেণী ও তিন একর দ্বিতীয় শ্রেণীর ভূমি আবাদ করে সেখানে খামার ঘরসহ বিভিন্ন ফলজ, বনজ গাছের বাগান সৃজন করে ভোগ করে আসছেন। একইভাবে পাশের ক্যাচিং ম্রোও ১১২নং হোর্ল্ডি মূলে তিন একর তৃতীয় ও দুই একর দ্বিতীয় শ্রেণীর ভূমি আবাদ করে বসতঘর ও বিভিন্ন ফলজ বনজ বাগান সৃজন করে ভোগ করছেন। পাশে বগাইছড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তির নামে ২৫ একর রাবার প্লট রয়েছে।
আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোসাইন মামুন রাবার প্লটের কাগজ দেখিয়ে হরি চন্দ্র ত্রিপুরা ও ক্যচিং ম্রো’র ভোগদখলীয় ভূমি জবরদখল করার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে বিগত ২০১৭ সালে অতর্কিতভাবে ৯-১০ জন শ্রমিক নিয়ে এসে হরি চন্দ্র ত্রিপুরা ও ক্যচিং ম্রো’র রোপন করা ৩০০ কলা গাছসহ বিভিন্ন গাছের চারা কেটে দেয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি বলে লিখিত বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন।
একপর্যায়ে গত মে মাসে স্থানীয় হেডম্যান, কার্বারী, ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে ভূমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি মিমাংসা হয়। কিন্তু মিমাংসিত বিষয়টিকে উপেক্ষা করে কিছুদিন যেতে না যেতেই শুধুমাত্র হয়রানির উদ্দেশ্যে গত ২৪ মে ২০২৩ ইউপি সদস্য হোসাইন মামুনের ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলাতে ক্যাচিং ম্রো, থাংবুই ম্রো, বলি চন্দ্র ত্রিপুরা, হরি চন্দ্র ত্রিপুরা ও তার ছেলে এনজিও কর্মী চন্দ্র মনি ত্রিপুরাকে বিবাদী করা হয়।