সিএইচটি ভ্যানগার্ড, ঢাকা
“পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নে ছাত্র সমাজ- জাতীয় সংহতি ও ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন”– এই স্লোগানে বিগত ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ইং রোজ শনিবার সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময়ে ঢাকার বাংলামোটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র হল-এ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার ৫ম সম্মেলন ও কাউন্সিল আনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার বিদায়ী কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী আম্বেদকর চাকমা।
সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি ও সাবেক ছাত্র নেতা শ্রী প্রত্যয় চাকমা। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জনতার সংসদ (বাজস) এর সংগ্রামী সভাপতি মাহফুজুর রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লড়াকু ছাত্র ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রী সুজন চাকমা (ঝিমিট); পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সংগ্রামী সভাপতি শ্রী রাজ্যময় চাকমা প্রমূখ।
এছাড়াও সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও ঢাকাস্থ জুম্ম ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা দেশে চলমান অরাজক পরিস্থিতির উপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দলমত নির্বিশেষে অধিকার আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। দেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, নারী নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি উল্লেখ করে বক্তারা এসব সমস্যা নিরসনে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এছাড়াও দেশে বিরুদ্ধ মত দমনে ক্ষমতাসীন সরকারের যে নীতি তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান।
সম্মেলন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের প্রাণের দাবী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের মূল সমস্যা ভূমি সমস্যা উল্লেখ বক্তারা ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে দ্রুত কার্যকরের মাধ্যমে এ অঞ্চলের ভূমি সমস্যা সমাধানে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের কথা বলা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল, পর্যটন-ইকোপার্কের নামে জুম্মদের ভূমি বেদখলের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বান্দরবানে প্রতিনিয়ত ম্রো-ত্রিপুরাদের ভূমি বেদখল করা হচ্ছে, এখানকার জুম্ম জনগণকে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে বক্তারা ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরো বলেন, প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন অজ্ঞীকার দেয়া হয়- চুক্তি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়া হয় নির্বাচনী ইশতেহারে। কিন্তু আমরা দেখেছি তার ছিটেফোঁটাও ক্ষমতাসীন সরকার বাস্তবায়ন করেনা। উপরন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত চুক্তি বিরোধী কার্যক্রমে সরকার জড়িয়ে পড়ছে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয় সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও চাকুরী ক্ষেত্রে আদিবাসীদের যে ৫% কোটা চালু ছিল তা বন্ধ করে দিয়ে প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া আদিবাসী জনগণকে এদেশের বৃহৎ অংশের সাথে সমানতালে এগিয়ে যেতে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে বলেও বক্তারা ব্যক্ত করেন।
সবশেষে শ্রী এল্টন চাকমাকে সভাপতি, শ্রী অরবিন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও শ্রী বিপুল চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট ৫ম ঢাকা মহানগর শাখা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নবাগত কমিটির প্যানেল ঘোষণা ও শপথবাক্য পাঠ করান পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী ও সুযোগ্য সাধারণ সম্পাদক শ্রী সোহেল চাকমা।