নানিয়ারচরে নিখোঁজ চার জুম্ম স্কুল ছাত্রী উদ্ধার, কাটেনি রহস্য

পার্বত্য চট্টগ্রামরাঙ্গামাটি

সিএইচটি ভ্যানগার্ড, নানিয়ারচর

গতকাল (২৪ আগস্ট ২০২১) রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নের তৈচাকমা জুনিয়র হাই স্কুলের ৪ জুম্ম স্কুল ছাত্রী স্কুলে এ্যাসাইন্টমেন্ট জমা দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীরা চিরনজিৎ দজরপাড়া গ্রামের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী মিটনা চাকমা, ধর্মিকা চাকমা, কয়লা চাকমা ও মন্টা চাকমা। সকালে এ্যাসাইন্টমেন্ট জমা দিতে গিয়ে তারা আর বাড়িতে ফিরে না এলে পরিবারের লোকজন তাদের খোঁজাখুজি শুরু করে।

পরে জানা যায়, স্কুলে এ্যাসাইন্টমেন্ট জমা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মো. জাহিদ (৬০) নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী তাদেরকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সাদা রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এ সময় ওই মাইক্রোবাসে আরো দু’জন লোকও (বাঙালি, নাম জানা যায়নি) ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু তিনি ছাত্রীদের বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান।

এরপর ঘটনাটি ব্যাপক জানাজানি হলে বিকালে এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানানোর জন্য জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে একজন স্কুল ছাত্রীর অভিভাবকের কাছে সেনা জোন থেকে ফোন করা হয়। বলা হয় নিখোঁজ হওয়া স্কুল ছাত্রীদের ছবি দেওয়ার। উদ্ধারে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল না করার অনুরোধ জানানো হয় সেনা জোন থেকে। এর কিছুক্ষণ সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ দল সেখানে উপস্থিত হয়।

একই দিন (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বগাছড়ি সেনা ক্যাম্প থেকে ছাত্রীর ওই অভিভাবককে ফোন করে জানানো হয় যে, ছাত্রীদের পাওয়া গেছে। গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে ছাত্রীদের অভিভাবকরা যেন নানিয়ারচর সেনা জোনে উপস্থিত হয়। খবর পেয়ে ছাত্রীদের অভিভাবক ও গ্রামের মুরুব্বিরা নানিয়ারচর সেনা জোনে গিয়ে উপস্থিত হন। এসময় অভিভাবক ও গ্রামের মুরুব্বিদের সামনে ছাত্রীদের বলা হয় যে, কেউ জিজ্ঞাসা করলে তারা যেন স্বইচ্ছায় বেড়াতে গেছে বলে জবাব দেয়। পরে গ্রামের মুরুব্বি ও অভিভাবকদের হাতে ছাত্রীদেরকে তুলে দেওয়া হয়।

জানা যায়, কাঠ ব্যবসায়ী মো. জাহিদ ও মাইক্রোবাসে থাকা ব্যক্তিরা ছাত্রীদেরকে তৈচাকমা এলাকা থেকে সিন্দুকছড়ি সড়ক হয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নিয়ে যায়। পরে ঘটনাাটি জানাজানির পর খোঁজাখুজি শুরু হলে স্থানীয় সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনও তৎপর হয়ে উঠে। এরপর সন্ধ্যায় ছাত্রীদেরকে বগাছড়িতে নিয়ে এসে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারপর তাদেরকে নানিয়ারচর জোনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে তাদেরকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

তবে, ছাত্রীদের উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হলেও পরিবারের অজ্ঞাতসারে যিনি তাদেরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছেন সেই কাঠ ব্যবসায়ী মো. জাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঘটনাটির রহস্য কাটেনি। তাদের আইনে আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে হয়তো ঘটনার সঠিক কারণ জানা সম্ভব হতো। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে ঘটনাটি এখনো রহস্যাবৃত রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক বলেই মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।

Tags: , , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

নানিয়ারচরে ইউপিডিএফ’র (প্রসীত) এক চাঁদা কালেক্টর আটক
জুরাছড়িতে AK-47 সহ নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে জেএসএস(সন্তু) সদস্য আটক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu