সিএইচটি ভ্যানগার্ড, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের মানবিক ও জননন্দিত ডাক্তার শহীদ তালুকদারকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে খাগড়াছড়ির নাগরিক সমাজ। আজ ( ১৭ জুলাই ২০২২) রোববার সকাল ১১ ঘটিকার সময় খাগড়াছড়ির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ১ হাজার লোকের গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক জনাব প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের মাধ্যমে আইন মন্ত্রী বরাবরে প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
মানববন্ধনে নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক তরুণ কুমার ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সনাকের সভাপতি প্রফেসর বোধি সত্ত্ব দেওয়ান, প্রফেসর ড. সুধীন কুমার চাকমা, এডভোকেট প্রতিম রায় পাম্পু, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, বাঙ্গামাটি ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. পরশ খীসা, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও নাগরিক কমিটির সমন্বয়কারী প্রদীপ চৌধুরী, প্রকৌশলী নির্মল দাশ, নারী অধিকার নেত্রী সেফালিকা ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. টুটুল চাকমা, মাতৃভাষা গবেষণায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, সাংবাদিক আজিম উল হক, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাহী সদস্য ধীমান খীসা, নারীনেত্রী লালসা চাকমা, সাংবাদিক চিংমেপ্রু মারমা, ফারিয়ার সাধারণ সম্পাদক তিলক বড়ুয়া এবং খাগড়াছড়ি নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব আবু দাউদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডাক্তার শহীদ তালুকদার একজন সাদামনের মানুষ। পাহাড়ের মানবিক ও জননন্দিত চিকিৎসক । একজন জনদরদি অসাম্প্রদায়িক চিকিৎসক ৷ কঠিন সময়ে বিতর্কিত রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে সরকারের গুরু দায়িত্ব পালন করছেন। তারা বলেন, ডা. শহীদ তালুকদার জেলা পরিষদের হস্তান্তরিত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ কমিটির সদস্য ছিলেন না। তিনি ছিলেন আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির একজন সদস্য মাত্র। তার কথায় বা স্বাক্ষরে কারো চাকরি হয়নি। তাছাড়া মূলসনদ দেখার নৈতিক দায়িত্বও তাঁর হাতে ছিলো না। তাই আমরা চাই মামলাটির অধিকতর তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সাজা দেয়া হোক। পাহাড়ের সাদামনের মানুষ ডাক্তার শহীদ তালুকদারকে মামলা থেকে অবিলম্বে অব্যাহতি প্রদান করা হোক। অন্যথায় পাহাড়ের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আরো কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলেও বক্তারা বলেন।
তারা বলেন, ডা. শহীদ তালুকদার জেলা পরিষদের হস্তান্তরিত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ কমিটির সদস্য ছিলেন না। তিনি ছিলেন আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির একজন সদস্য মাত্র। তার কথায় বা স্বাক্ষরে কারো চাকরি হয়নি। তাছাড়া মূলসনদ দেখার নৈতিক দায়িত্বও তাঁর হাতে ছিলো না। তাই আমরা চাই মামলাটির অধিকতর তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সাজা দেয়া হোক। পাহাড়ের সাদামনের মানুষ ডাক্তার শহীদ তালুকদারকে মামলা থেকে অবিলম্বে অব্যাহতি প্রদান করা হোক।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনস্থ স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মচারী নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি খাগড়াছড়রি সাবেক সিভিল সার্জনসহ ৬ জনকে আসামি করে দুর্নীতি কমিশন দুদক মামলা দায়ের করেন। মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরষিদের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীর কিশোর চাকমা অটল, খাগড়াছড়রি তৎকালীন সভিলি সার্জন ডা. নারায়ন চন্দ্র দাশ, তৎকালীন রাঙামাটির সিভিল সার্জন ও বর্তমান রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডা. শহীদ তালুকদার, জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রিয় কুমার চাকমা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরেও ২০১৩ সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রিত পার্বত্য স্বাস্থ্য বিভাগে ফার্মাসিস্ট পদে বাবুছড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উদয়ন চাকমা ও আলুটিলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সুমন চাকমাকে নিয়োগ দেয়া হয়।