নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে বৈ-সা-বি মেলার উদ্বোধন

আদিবাসীখাগড়াছড়িপার্বত্য চট্টগ্রাম

সিএইচটি ভ্যানগার্ড, খাগড়াছড়ি

পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহৎ ও প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিজু, বিহু, বিষু ও পাতাবাহা উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়িতে বৈসাবি মেলার উদ্বোধন হয়েছে গতকাল।

গতকাল (২৮ মার্চ ২০২৫) বিকাল ৫ ঘটিকার সময় খাগড়াছড়ি শহরের স্লুইস গেইট ও নিউজিল্যান্ড সড়ক সংলগ্ন মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলা উদ্বোধন করেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান বাবু সুদত্ত চাকমা।

মেলার মাঠে প্রবেশের সময় গেইটে ফিটা কেটে এবং মাঠে প্রবেশের পর বেলুন উড়িয়ে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাবু সুদত্ত চাকমা। এরপর মেলার প্রতিটি স্টল পরিদর্শন করেন উদ্বোধক বাবু সুদত্ত চাকমা। স্টল পরিদর্শন শেষে মেলার আয়োজক কমিটির সম্মানিত সভাপতি ও উপজাতীয় ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি বাবু রবিশংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে অতিথিরা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। এরপর ক্রাজরী মারমার নেতৃত্বে অতিথিদের উত্তরীয় পরিধান করিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

এরপর খাগড়াছড়ি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউড এর শিল্পীদের আয়োজনে পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রদর্শন পূর্বক একটি ডিসপ্লের আয়োজন করা হয়। এরপর ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী গরিয়া নৃত্য পরিবেশন করা হয়। গরিয়া নৃত্য শেষে আলোচনা সভা শুরু হয়, এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বাবু প্রত্যয় চাকমা। সভায় উপস্থিত থেকে অতিথি বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ (বাত্রিকস)- এর কেন্দ্রীয় সভাপতি বাবু কমল বিকাশ ত্রিপুরা; পানখাইয়া পাড়ার সম্মানিত কার্বারী মহোদয় বাবু নিয়ং মারমা; সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও সমাজসেবক বাবু অনিমেষ চাকমা রিংকু; বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বাবু ম্রাসাথোয়াই মারমা; পার্বত্য জেলা পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাবু প্রিয় কুমার চাকমা।

এছাড়াও সভায় উপস্থিত থেকে মেলাকে সাফল্যমন্ডিত করেছেন শরনার্থী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু সন্তোষিত চাকমা বকুল, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু সুদর্শন চাকমা, লক্ষীছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু সুপার জ্যোতি চাকমা, পানছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু সর্বোত্তম চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু ধর্মজ্যোতি চাকমা প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, এরকম একটি মেলার আয়োজন পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীর একটি মিলনমেলায় রুপান্তরিত হয়েছে। পাহাড়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রধান সামাজিক উৎসবের যে আমেজ তা আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে তুলেছে। এই মেলার মাধ্যমে যেমনি আমাদের আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে তেমনি আদিবাসী নানা পণ্য সামগ্রীও এসেছে। পাশাপাশি পাহাড়ের যে তরুণ উদ্যোক্তারা রয়েছেন তাদেরও ব্যবসাকে সম্প্রসারণ এবং শেখার একটা ক্ষেত্র বলেও বক্তারা মন্তব্য করেন।

এই মেলা যেমনি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সহায়তা করছে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জুম্মদের ব্যবসার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সাবলম্বী করতেও সহায়তা করবে বলেও বক্তারা মন্তব্য করেন।

মেলায় ১১০টা স্টলে আদিবাসী নানা পণ্য সামগ্রী ও নানা প্রকারের আদিবাসী খাবারের সমাহার রয়েছে এ মেলায়। মেলা চলবে ২৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।

Tags: , , , , , , , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি জেএসএস’র শ্রদ্ধা নিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu