রামু ট্রাজেডির ১ যুগ: ১৮টি মামলার একটিও সমাপ্ত হয়নি

জাতীয়সংখ্যালঘু

সিএইচটি ভ্যানগার্ড

কক্সবাজারের রামুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বসতিতে সাম্প্রদায়িক হামলার ১ যুগ অতিক্রান্ত হলেও এ সংক্রান্ত ১৯টি মামলার একটিরও বিচার কাজ শেষ হয়নি। ১৮ মামলায় ১৫ হাজার ১৮২ আসামির মধ্যে এই পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৫২৬ জন।(rajshahirsomoy.com)

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উত্তম বড়ুয়া নামের এক বৌদ্ধ যুবকের ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননাকর ছবি ট্যাগ করাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উগ্রপন্থীরা ঝলসে দিয়েছিল কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লী। পরে রামু থেকে ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে জেলার উখিয়া ও টেকনাফসহ চট্রগ্রামের পটিয়া পর্যন্ত।

উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে ইসলামি মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বৌদ্ধপল্লীতে এবং মন্দিরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হামলা চালায়। সেই সময় পুড়ে যায় ১২টি বৌদ্ধ বিহার, ২৬টি বসতঘর। পাশাপাশি আরও ছয়টি বৌদ্ধ বিহার এবং শতাধিক বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর বিকালে উখিয়া ও টেকনাফে আরও চারটি বৌদ্ধবিহারে হামলা চালানো হয়। এতে পুড়ে যায় এসব বিহারে থাকা হাজার বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

এ ঘটনায় রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রামু থানায় আটটি, উখিয়ায় সাতটি, টেকনাফে দুটি ও কক্সবাজার সদর থানায় দুটি মামলা রেকর্ড হয়। এসব মামলায় অভিযুক্ত করা হয় ১৫ হাজার ১৮২ জনকে।

১৯ মামলার মধ্যে রামু থানায় সুধাংশু বড়ুয়ার করা মামলাটি দুপক্ষের আপোস মীমাংসার ভিত্তিতে খারিজ করে দেন আদালত। বাকি ১৮টি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন। চার্জশিটে ত্রুটি থাকায় পুনঃতদন্তে পাঠানো হয়েছে তিনটি মামলা।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চান না বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষরা। প্রকৃত অপরাধীর শাস্তির দাবিও জানান তারা।

যে বৌদ্ধ তরুণ উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক আইডির মাধ্যমে বিতর্কিত ছবি ছড়ানোর গুজব ওঠে, গত ১যুগ পরেও তার কোনো খোঁজ পায়নি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এতেই স্পষ্ট হয় যে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর হতে দেশে হিন্দু সম্প্রদায় ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে উগ্র ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন জারি করেছে। শুধু রামু নয় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হামলা, হত্যা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে কিন্তু আজ পর্যন্ত একটিরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

Tags: , , , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

খাগড়াছড়ির মহাজন পাড়ায় জেএসএস কর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রচেষ্টা
শহীদদের স্মরণে খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় মোমবাতি প্রজ্বলন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu