সিএইচটি ভ্যানগার্ড
আজ নানিয়াচর বগাছড়িতে রাষ্ট্রীয় বিশেষ বাহিনী ও সেটেলার বাঙালিদের কর্তৃক জুম্মদের উপর নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলার ৯বছর। ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়। ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর সেটেলার বাঙালিদের রোপনকৃত আনারস ও সেগুন চারা রাতের আধারে কে বা কারা কেটে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেটেলার বাঙালিরা অহেতুক জুম্মদের উপর এই নৃশংস সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত করে।
স্থানীয় সূত্রমতে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ৩নং বুড়িঘাট ইউনিয়নের বগাছড়িতে রাষ্ট্রীয় বিশেষ বাহিনীর উপস্থিতিতে সেটেলার বাঙালিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে ৩টি জুম্ম গ্রামে হামলা চালায়। হামলায় সুরিদাস পাড়ায় ৩৯টি, বগাছড়ি গ্রামে ৭টি, নবীন তালুকদার পাড়ায় ৪টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চৌদ্দমাইলে ৭টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করা হয়। এছাড়াও ৫টি দোকানে লুটপাট ও ভাংচুর চালানো হয়।
হামলায় একজন জনপ্রতিনিধিসহ ২জন জুম্ম গ্রামবাসীকে মারধর করা হয়, ২টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও সেটেলার বাঙালিরা বগাছড়ি করুণা কুটির বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালিয়ে বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উবাসা ভিক্ষুকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং দুটি বুদ্ধ মূর্তি ভাংচুর ও ৫টি পিতলের বুদ্ধমূর্তি লুট করে নিয়ে যায়। সাম্প্রদায়িক এ নৃশংস হামলায় ৩০০জন জুম্ম গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তির পর হতে ডজনের অধিক সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাত, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সংঘটিত হলেও একটি হামলারও কার্যকর বিচার জুম্ম জনগণ পাইনি। নানিয়াচরের এই সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারও হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। একটি দেশের বিজয় দিবসের দিনে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের উপর এরকম সাম্প্রদায়িক হামলা সত্যিই ভাবিয়ে তোলে “দেশ বিজয় অর্জন ও স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি ব্যতিত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীরা আদৌ কি বিজয় পেয়েছে? আদৌ কি স্বাধীনতা পেয়েছে?”