ভ্যানগার্ড ডেস্ক
পিসিপি নেতা ক্যাজাই মারমার ২৫তম শহীদ দিবস আজ। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে (৩১ মার্চ) খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়া পাড়া এলাকায় এপি ব্যাটালিয়ানের সদস্যদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।
রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা পিসিপি নেতা চাথোয়াই প্রু মারমাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়। তারই প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবীতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ১লা এপ্রিল ১৯৯৬ইং সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। অবরোধ কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ৩১ মার্চ সন্ধ্যা ৬.৪৫ টার দিকে ক্যজাই মারমাসহ পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকরা প্রচারণায় নামেন। প্রচারণার সময় মধুপুরস্থ এপি ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা বাঁধা দেয়। এ সময় অবরোধ ও অবরোধের পক্ষে প্রচারণা গণতান্ত্রিক, মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকারের কথা তুলে ধরেন নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে যুক্তিতে না পেরে এপি ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে নেতাকর্মীদের উপর গুলিবর্ষণ করেন এবং এতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ক্যজাই মারমা। এতে আরও অনেকেই আহত হন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সহযোদ্ধাদের সাথে কিছুদূর দৌড়ে যেতে সক্ষম হন। এরপর প্রচন্ড রক্তক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ক্যজাই মারমা। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ইতিহাস ও জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামের ইতিহাসে শহীদের তালিকায় যুক্ত হয় আরও একটি নাম ক্যজাই মারমা। ঘটনার পর সেদিন রাতে মৃতদেহটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিটি ঘরে ঘরে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালায় এপি ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা।
এরপর ১লা এপ্রিল ১৯৯৬, হাজার হাজার শোকার্ত জনতা শহীদ ক্যজাই মারমার লাশ নিয়ে রাজপথে নেমে আসে। মিছিলটি পানখাইয়া পাড়া হতে শুরু করে খাগড়াছড়ি বাজার, শাপলা চত্বর চেঙ্গী স্কোয়ার হতে ঘুরে আসার পথে ওঁৎপেতে থাকা পুলিশের সদস্যরা শাপলা চত্বর পৌঁছলে মিছিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ, রাবার বুলেটসহ সীসাও চোড়ে। এতে শত শত লোক আহত হয়। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের অনেক নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় এবং শহীদ ক্যজাই মারমার লাশও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ছাত্র নেতার হত্যাকান্ডসহ পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা-চট্টগ্রামসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এবং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবী জানায়।