ভেনগার্ড প্রতিবেদক
সত্যের জয় অনিবার্য “জুম্ম জাতির ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হোন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (গণতান্ত্রিক)- এর ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
আজ ১৫ই নভেম্বর ২০২০, রবিবার সকাল ১০ ঘটিকার সময়ে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মারমা উন্নয়ন সংসদ কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা।
আলোচনা সভার শুরুতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শহীদ তপন জ্যোতি চাকমা (বর্মা) ও জুম্ম জাতীয় চেতনার অগ্রদূত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাসহ জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মবলিদানকারী সকল বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট শোক নীরবতা পালন করা হয়। এরপর কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভা শুরু করা হয়।
কেন্দ্রীয় সদস্য অমর চাকমার সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মিটন চাকমার সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সদস্য সুলেন চাকমা।আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ ধর্ম ও রাজনৈতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্যপাত্র এ্যাডভোকেট রাজীব দাশ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ও রাজনৈতিক গবেষক মোঃ আশাদুল ইসলাম, জেএসএস’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক বিভূ রঞ্জন চাকমা, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সভাপতি জনার্দ্দন দে, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্যামল কান্তি চাকমা।
এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পিসিপি’র (গণতান্ত্রিক) কেন্দ্রীয় সভাপতি দীপন চাকমা, কার্বারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেমব্রত চাকমা, বিশিষ্ট মুরুব্বি রবিজয় চাকমাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বক্তারা বলেন, ৮৩’র প্রেতাত্মা ইউপিডিএফ (প্রসীতপন্থী) এখন জনবিচ্ছিন্ন। জুম্ম জনগণ প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের কার্যকলাপে জনগণ আজ অতিষ্ট। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেই ৯৭’ সাল হতে প্রসীত খীসার সন্ত্রাসীবাহিনী চুক্তিবিরোধী কার্যকলাপ করে যাচ্ছে। হত্যা, চাঁদাবাজী, লুটপাটের রাজনীতি করে জুম্ম জনগণের অধিকার অর্জন করা সম্ভব নয়, জুম্ম জনগণের মুক্তির সনদপত্র পার্বত্য চুক্তির স্বপক্ষে ফিরে এসে জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করার জন্য প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফের প্রতি বক্তারা আহবান জানান।
পাহাড়কে প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফ ও সন্তু লারমার দল গাজা-ফিলিস্তিনের মত অঞ্চল বানিয়ে ফেলেছে বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন। বক্তারা বলেন প্রসীতপন্থী ও সন্তু লারমার দল অস্ত্রের মুখে পাহাড়ের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে, জুম্ম জনগণের জাতীয় জীবনে তারা এক ভয়ংকর কালো থাবা বসিয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, অগণতান্ত্রিক,বলপ্রয়োগের রাজনীতি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, অপহরণ, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জাতীয় দিবস বর্জনের রাজনীতি করছে। প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফ ও সন্তু লারমা দলের নেতারা নিজেদের পকেট ভারী করে মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে নীতিহীন, আদর্শহীন, লক্ষ্যভ্রষ্ট, দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফ ও সন্তু লারমা দলের বর্তমান নেতৃত্ব জুম্ম জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।