সিএইচটি ভ্যানগার্ড
সাজেকের বাঘাইহাট এলাকায় ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থী কর্তৃক সাধারণ জনগণের উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ, নিহত-১ ও আহত-১২।
আজ ১৮জুন ২০২৪ , রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট এলাকায় সাধারণ জনগণের উপর ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীদের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গিয়েছে। এতে ১জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহতের খবর পাওয়া গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রমতে জানা যায়, আজ সকালে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা বাঘাইহাট এলাকার মুরুব্বিদের মাধ্যমে প্রতিটি ঘর থেকে একজন করে ৩৬নং সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়। সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে ডাকা হয়। যারা উপস্থিত থাকবেনা তাদের উপর কড়া হুশিয়ারি দেওয়া হয়। আলোচনা সভায় এসে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা বাঘাইহাটে অবস্থানরত জেএসএস ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের সদস্যদের উপর মিছিলের মাধ্যমে ঘেরাও ও হামলা করার জন্য হুমকি প্রদান করা হয়। এতে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা সাধারণ জনগণকে অস্ত্রের জোরে তা করাতে বাধ্য করায়।
এসময় সাজেকের গঙ্গারাম মূখ এলাকা থেকে মিলন চাকমা (নির্জন বাপ-৩৫) নামে একজনকে মিছিলে না যাওয়ায় ব্যাপক মারধর করে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা।
এরপর অস্ত্রের জোরে সাধারণ জনগণকে উস্কে দিয়ে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা প্রতিপক্ষ সংগঠনগুলোর সদস্যদের আক্রমণের চেষ্টা করলে নিরীহ-নিরস্ত্র প্রতিপক্ষ দলের সদস্যরা সাধারণ কিছু মহিলাকে জোর করে হটিয়ে দিয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেয়। কিন্তু তারপরও ইউপিডিএফ সমর্থিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও এবং বাধ্য করা সাধারণ জনগণ সেখানে গিয়ে রুমের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। পরে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা বাইরে থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ১২ জন আহত হন, এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন নিহত হন। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
গুরুতর আহতদের মধ্যে শান্তি পরিবহনের সুপারভাইজার মোঃ নাঈমকে (৩৫) দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে তিনি সেখানেই মারা যান। জানা যায়, নিহত মোঃ নাইম ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে গোসলের জন্য যাচ্ছিলেন।
প্রসীতপন্থী সন্ত্রাসীদের হামলায় হামলায় আহতদের মধ্যে ১২ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- ১.রিপনা চাকমা (৩৭), ২. অরুন চাকমা (৩০), ৩. বিনয় চাকমা (৪০), ৪. সুরন চাকমা (৩০), ৫. দেব রঞ্জন চাকমা (৪৫), ৬. মনিষা চাকমা (১৩), তিনি ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী, ৭. সাধন চাকমা (৪৫), ৮. মিতা চাকমা (৩০), ৯. সবিনয় চাকমা (৩২), পিতা-তুঙ্গে চাকমা, সাং- ভিতর রেটকাটা, ৪নঙ ওয়ার্ড, ৩৬নং সাজেক ইউনিয়ন, তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন; ১০. চিক্কো মনি চাকমা (৩০), ১১. সোনা মনি চাকমা (২৫), ১২. ধুলেয়ে চাকমা (৩৫), পিতা-রেবতী মোহন চাকমা, সাং-উত্তর ভাইবোনছড়া, ৫নং ওয়ার্ড, ৩৬নং সাজেক ইউনিয়ন।
উল্লেখ্য যে, সাংগঠনিক কাজে কয়েক মাস আগে হতে জেএসএস (লারমা) ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের বেশ কিছু কর্মী বাঘাইহাটে অবস্থান করছিলেন। সে কারণে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা সাংগঠনিকভাবে নিজেদের অবস্থান নড়বড়ে হবে এমন আশংকায় সাধারণ জনগণকে অস্ত্রের জোরে প্রতিপক্ষ দলের সদস্যদের দিয়ে হামলার পরিকল্পনা করে আসছিল। কিছু আজ (১৮/০৬/২০২৪) সাধারণ জনগণ যখন একটু এগিয়ে গলা মিলিয়েছিল সে সুযোগে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ইউপিডিএফ প্রসীতপন্থীরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
আজকের এই ঘটনার পর বাঘাইহাট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাধারণ জনগণ সকলে প্রসীতপন্থীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে। কেননা সাধারণ জনগণ বলছে, প্রসীতপন্থী ইউপিডিএফরা জোর করে অস্ত্রের জোরে তাদের রাস্তায় নামিয়েছে এবং অন্য সংগঠনের উপর হামলা করিয়েছে উপরন্তু তারাই আবার সাধারণ জনগণের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে।