খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

লংগদু গণহত্যার ৩৬ বছর উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়িতে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ।
আজ (৪ঠা মে) বিকাল আনুমানিক ৫.৩০ ঘটিকার সময় খাগড়াছড়ি শহরের মহাজন পাড়াস্থ এমএন লারমা ভাস্কর্য পাদদেশে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণসভায় পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকমার সঞ্চালনায় ও পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুনেন্টু চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুমতি বিকাশ চাকমা; কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক সুনয় চাকমা; কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিশান চাকমা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, লংগদু গণহত্যার ৩৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২৪টির অধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে কিন্তু জুম্মরা তার একটিরও সুষ্ঠু বিচার পায়নি। শুধু তাই নয়, পাহাড়ে যত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়েছে তারও একটিও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। ফলতঃ জুম্মদের উপর হামলা মাঝেমধ্যে সংঘটিত হতে আমরা দেখতে পাই।

পুরো বাংলাদেশে যেভাবে ধর্ষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামেও এর মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীরা রাস্তাঘাটে, অফিস আদালতে, বাস কিংবা বাজার ঘাটে কোনখানেই নিরাপদ নয়। দেশে যে পরিমাণ উগ্র ইসলামি মৌলবাদের উত্থান হয়েছে তাতে বাংলাদেশকে মধ্যযুগের মত অন্ধকারে নিয়ে যাচ্ছে বলেও বক্তারা মন্তব্য করেন।
লংগদু গণহত্যা আমাদের জুম্ম ছাত্র সমাজ তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে। এই গণহত্যার অগ্নিগর্ভ থেকে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের পদযাত্রা এবং পাহাড়ে অধিকার আদায়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম মাইলফলক। বক্তারা স্মরণসভা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল গণহত্যার দ্রুত বিচারের দাবী জানান।
স্মরণসভা শেষে শহীদদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে তৎকালীন লংগদু উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার আততায়ীর হাতে মৃত্যু হলে তার দায় শান্তিবাহিনীদের উপর ছাপিয়ে দিয়ে জুম্মদের উপর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সেটেলার বাঙ্গালিরা মিলে গণহত্যা চালায়। এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর রিপোর্ট অনুযায়ী এতে ৩৬ জন জুম্ম নর-নারী নিহত হন। স্থানীয়দের মতে এ সংখ্যা ২০০ এর অধিক।