সিএইচটি ভ্যানগার্ড

পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি খাগড়াছড়ি সদর থানা কমিটির ৩য় ও মাটিরাঙ্গা থানা কমিটির ১ম যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অদ্য ৩০ জুন ২০২৫, “নিজেদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন যুব সমাজই জাতীয় এবং জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামের অগ্রসৈনিক “- এই স্লোগানে খাগড়াছড়ি সদরের তেঁতুলতলাস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কার্যালয়ের হলরুমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুমেন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যয় চাকমা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২নং কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি খাগড়াছড়ি সদর থানা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি সুনীল চাকমা; পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সভাপতি জ্ঞান প্রিয় চাকমা প্রমূখ। এতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও যুব সমিতির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
যুব নেতা সন্তোষ চাকমা’র সঞ্চালনায় সম্মেলনের শুরুতে প্রয়াত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাসহ জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের আন্দোলনে এযাবৎকালে যারা শহীদ হয়েছেন,পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব নেতা অনন্ত চাকমা। ধারাবাহিক বক্তব্য রাখেন যুব সমিতি দীঘিনালা থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রহেল চাকমা; যুব সমিতি পানছড়ি থানা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি জুমান চাকমা, যুব সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমর জীবন চাকমা এবং খাগড়াছড়ি জেলা কমিটি যুব সমিতির সভাপতি সোনামনি চাকমা।
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে সুনীল চাকমা বলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও অধিক সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৭ সালে চুক্তি হয়েছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে। অথচ আজ দীর্ঘ ২৭ টি বৎসর অতিবাহিত হয়ে গেলেও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ণ না হওয়া অত্যন্ত দুঃখের এবং বেদনার। আওয়ামীলীগ দীর্ঘ ১৬ বৎসর ক্ষমতায় থেকেও চুক্তি গড়িমসি করেছে। তাই আমাদের যুবকদের প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। কারণ প্রস্তুতিহীন সুযোগ নাকি কোন সুযোগই নয়। যদি আবার প্রয়োজন পড়ে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে প্রত্যয় চাকমা বলেন- একটি দেশ, জাতি ও সমাজে সবচেয়ে সক্রিয় ও সজীব শক্তি যুবকরাই। যুগে যুগে নানান যুদ্ধ, বিদ্রোহে যুবকরাই সবচেয়ে এগিয়ে এসেছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে তাদের অংশগ্রহণের ভূমিকা সবসময়ে সবার উপরে ছিল। মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাও যুব শক্তিকে লড়াই, সংগ্রামে অবতীর্ণ করেছিলেন পাহাড়ে।
আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামের চুক্তি বিরোধী অপশক্তিকে সকল ধরণের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিতে হবে। জাতির বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করা সহজ হবে না। বরং শাসকগোষ্ঠীর দাবাগুটির মতন ব্যবহৃত হয়ে কালক্ষেপণ হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই ষড়যন্ত্রকারীদের সকল রণনীতি-রণকৌশলকে পরাস্ত করতে হবে। নচেৎ জুম্ম জাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে মানচিত্র থেকে।
এরপর সুমেন ত্রিপুরাকে সভাপতি, সমীর চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও অভিক চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ৩য় খাগড়াছড়ি সদর থানা যুব সমিতি এবং জিতু ত্রিপুরাকে সভাপতি, অনিল ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও গণিময় ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ১ম মাটিরাঙ্গা থানা যুব সমিতি গঠন করা হয়।
প্যানেল ঘোষণা ও শপথ বাক্য পাঠ করান পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্বলন্ত চাকমা।