মহান নেতা এমএন লারমা’র ৮২তম জন্মদিবস আজ

পার্বত্য চট্টগ্রাম

ভ্যানগার্ড ডেস্ক

সাবেক সাংসদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠা ও জুম্ম জনগণের জাতীয় জাগরণের অগ্রদূত মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮২তম জন্মদিবস আজ।

লারমা ১৯৩৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট মৌজার মহাপুরম (মাওরুম) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম চিত্ত কিশোর চাকমা, মাতার নাম সুভাষিণী দেওয়ান। ৪ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। সবার বড় বোন জ্যোতিপ্রভা লারমা (মিনু), বড় ভাই শুভেন্দু প্রভাস লারমা (বুলু), ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু)। তাঁর স্ত্রীর নাম পঙ্কজিনী চাকমা। তাঁর এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ছেলে জয়েস লারমা, মেয়ে পারমিতা লারমা।

শিক্ষাজীবনঃ (ক) প্রাথমিক শিক্ষা – মহাপুরম জুনিয়র হাই স্কুল। (খ) ম্যাট্রিক – ১৯৫৮ সাল, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। (গ) আই এ – ১৯৬০ সাল, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ। (ঘ) বি এ – ১৯৬৫ সাল, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ। (ঙ) বি এড – ১৯৬৮ সাল। (চ) এল এল বি – ১৯৬৯ সাল।

কর্মজীবনঃ (ক) ১৯৬৬ সালে দীঘিনালা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান। (খ) ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে কলোনী হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক ছিলেন। (গ) ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বার এসোসিয়েশনে আইনজীবি হিসেবে যোগদান।

রাজনৈতিক জীবনঃ
১৯৫৬ সাল থেকে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনে পদার্পন।
১৯৫৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম পাহাড়ী ছাত্র সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা।
১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদান।
১৯৬০ সালে পাহাড়ী ছাত্র সমাজে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন।
১৯৬১ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিতকরণ।
১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত পাহাড়ী ছাত্র সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা।
১৯৬৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী নিবর্তনমূলক আইনে আটক (চট্টগ্রামের পাথরঘাটাস্থ পাহাড়ী ছাত্রাবাস হতে)।
১৯৬৫ সালের ৮ মার্চ চট্টগ্রাম কারাগার থেকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি লাভ।
১৯৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন ও অন্যতম উদ্যোক্তা।
১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত।
১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট ৪ দফা সম্বলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনের দাবীনামা পেশ।
১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি গঠন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত।
১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ সংবিধানে জুম্মদেরকে ‘বাঙালি’ হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রতিবাদে গণ পরিষদ অধিবেশন বর্জন।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত।
১৯৭৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ত্ব গ্রহণ।
১৯৭৪ সালে সরকারের পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি হিসেবে কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে লন্ডন সফর।
১৯৭৫ সালে বাকশালে যোগদান।
১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট থেকে আত্মগোপন করেন।
১৯৭৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ১ম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে পুনঃ নির্বাচিত।
১৯৮২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ২য় সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে পুনঃ নির্বাচিত।


১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর ভোর রাতে বিভেদপন্থী গিরি-প্রকাশ-দেবেন-পলাশ চক্রের বিশ্বাসঘাতকতামূলক অতর্কিত আক্রমণে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার খেদারাছড়ার থুমে নির্মমভাবে শহীদ হন।

প্রতিবছর তাঁর আত্মদানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ অনারম্বড়ভাবে তাঁর জন্মদিবস উদযাপন করে থাকেন। খাগড়াছড়িতে আজ সকাল ১০টায় মহান নেতার জন্মদিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গিয়েছে।

Tags: , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

এমএন লারমা’র জন্মদিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে পিসিজেএসএস’র আলোচনা সভা
মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার সংক্ষিপ্ত জীবনী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu