মহালছড়ি প্রতিবেদক
মহালছড়ির খুলারামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত যুব সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অংশুমান চাকমা উপস্থিত নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন - প্রভু নয়, জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে হবে।
“যুব সমাজই দেশ ও জাতির প্রাণশক্তি, আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির মহালছড়ির উপজেলাধীন মুবাছড়ি ইউনিয়নের খুলারামপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মহালছড়ি এবং নানিয়ারচর থানার যৌথ যুব সম্মেলনে মহালছড়ি থানা যুব সমিতি বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিটেন চাকমার সঞ্চালনায় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি রতন চাকমা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সমরজিৎ খীসা, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্ঞানপ্রিয় চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মহালছড়ি থানার সভাপতি নীল রঞ্জন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নানিয়ারচর থানার সভাপতি প্রীতি কুমার চাকমা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমরজিৎ খীসা বলেন, সার্বিকভাবে আমরা ভালো নেই, জুম্ম জনগণ ভালো নেই। পারিপার্শ্বিক বাস্তবতা এখনও জুম্ম জনগণের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার অনুকূল নয়। তাই এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করে জুম্ম জাতিকে সঠিক দিশা দেখাতে হলে ছাত্র এবং যুব সমাজের এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। তিনি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, একটা সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে ছাত্র এবং যুব সমাজকে আন্দোলন বিমুখ করার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্লাব সংস্কৃতির নামে মদ, জুয়াতে আসক্ত করে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে তার ডিজিটাল রুপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। যে নেশায় বুদ হয়ে থাকতে দেখা যায় বর্তমান তরুণ প্রজন্মের অনেককে । তিনি এসকল ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে, নিজেদের ইতিহাসকে জেনে আগামী দিনে চির অবহেলীত জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পথ প্রদর্শক হওয়ার আহ্বান জানান সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অংশুমান চাকমা আরও বলেন, বিশ্বের টালমাটাল পরিস্থিতির প্রভাব আমাদের দেশে এমনকি জুম্মদের উপরেও পড়েছে । এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ থাকলেও হতাশ না হয়ে কঠিন বাস্তবতাকে স্বীকার করে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি তাঁর বক্তব্যে কর্মী কর্মীর মধ্যে ঐক্য, কর্মীর সাথে জনগণের ঐক্য সাধনের মাধ্যমে প্রবীণের অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের উদ্যোগ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে উপস্থিত মহালছড়ি এবং নানিয়ারচর উপজেলার যুব প্রতিনিধি এবং পর্যবেক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে রিটেন চাকমাকে সভাপতি, অসিত বরণ চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং তনয় চাকমা সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট যুব সমিতি, মহালছড়ি থানা কমিটি এবং অভি চাকমাকে সভাপতি, মিকেল চাকমা সম্পাদক এবং কানন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট যুব সমিতি নানিয়ারচর থানা কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনে নবগঠিত কমিটিদ্বয়ের সদস্যদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চাকমা শপথবাক্য পাঠ করান।
