খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখার যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক মহৎ চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- “জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন” এই স্লোগানে খাগড়াছড়ি সদরের তেঁতুলতলা পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অদ্য ৬ জুন ২০২৫ ইং রোজ শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময়ে ১৯ তম খাগড়াছড়ি ও ২০ তম রাঙ্গামাটি যৌথ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকমার সঞ্চালনায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মৃনাল চাকমার সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা ও পিসিজেএসএস খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যয় চাকমা; সাবেক ছাত্র নেতা ও পিসিজেএসএস রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জগদীশ চাকমা, সাবেক ছাত্র নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি সোনামনি চাকমা; পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা; হিল ইউমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মায়া চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা নতুন নেতৃত্বে গতিশীল ও আগামী দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র সমাজকে অধিকতর সক্রিয় করার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন বিগত যেকোন সময়ের তুলনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। রাষ্ট্রের একদিকে চুক্তি বাস্তবায়নে নানা ষড়যন্ত্র এবং চুক্তি বিরোধী কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে চলেছে। দেশে অনির্বাচিত সরকার থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ফলে উগ্র মৌলবাদীরা দেশে মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। পুরো দেশের ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামেও এ উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উত্থান হয়েছে। পাহাড়ে উন্নয়নের নামে ভূমি বেদখল, জুম্ম নারীদের উপর নিপীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের আজকে ২৭ টি বছর অতিক্রান্ত হলেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব আজকে সংকটের মুখে পড়েছে। নিজ ভূমিতে তারা আজ সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। একদিকে রাষ্ট্রযন্ত্রের নানা ষড়যন্ত্র অন্যদিকে পাহাড়ে বিবাদমান আঞ্চলিক দলগুলোর ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জুম্ম তরুণদের রাজনীতি বিমূখ করছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের কারণে পাহাড়ের মানুষের তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। আজকে তারই পাশাপাশি জুম্ম তরুণ সমাজ নেশা ও অনলাইন জুয়ায় ডুবে রয়েছে, সমাজের সর্বস্তরে এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদকে। তাই জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে যা যা করণীয় তাই করতে নতুন এই নেতৃত্বকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সর্বশেষ পুরাতন পিসিপি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখা বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ যৌথ জেলা সম্মেলনে ১৯ তম পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখায় জেসলেন চাকমাকে সভাপতি, ধনঞ্জয় ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও নিটিন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
২০ তম পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখায় সুকেশ চাকমাকে সভাপতি, রাকেশ চাকমা সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ণ চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
পিসিপি যৌথ খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখার প্যানেল ঘোষণা ও শপথ বাক্য পাঠ করান পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সভাপতি সুজন চাকমা ঝিমিট।
