সিএইচটি ভ্যানগার্ড, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ৮ম খাগড়াছড়ি সদর থানা শাখা ও ১ম খাগড়াছড়ি টেকনিক্যান স্কুল এন্ড কলেজ শাখার যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে ছাত্র-তরুণ সমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলুন এই স্লোগানে” আজ (৮ই মার্চ ২০২৫) বিকাল ৩ ঘটিকার সময় তেঁতুলতলাস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের হলরুমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র নেতা সুবরণ চাকমার সঞ্চালনায় ও পিসিপি খাগড়াছড়ি থানা শাখার বিদায়ী কমিটির সভাপতি সবুজ চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মৃনাল কান্তি চাকমা। উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিশান চাকমা; কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনেন্টু চাকমা; যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ডালিম ত্রিপুরা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, ৯০ এর দশকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র আন্দোলনের পাশাপাশি পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের মাধ্যমে পাহাড়ের তরুণ-ছাত্র সমাজ রাজপথে নিজেদের দাবী-দাওয়া নিয়ে সরব হয়েছিল। সেই ১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে সংগঠিত লংগদু গণহত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ২০ মে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের জন্ম হয়েছিল। সেই থেকে বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ জুম্ম জনগণের জাতীয় মুক্তির প্রশ্নে আজো লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
জুম্ম জনগণের রাজনৈতিক অধিকারের দাবীতে আন্দোলনের পাশাপাশি কুসংস্কারচ্ছন্ন জুম্ম সমাজকে পরিবর্তন তথা পশ্চাৎপদ জুম্ম সমাজে শিক্ষার বিস্তার ঘটানো, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন ভাষাভাষী জাতিসমূহের মধ্যে বৈষম্য দূর করে জুম্ম জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার কাজও এই ছাত্র সমাজকে করতে হবে। যুগে যুগে ছাত্র-তরুণ সমাজই একটি জাতিকে, একটি দেশকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করেছে। ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ‘৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৯ এর গণ আন্দোলনসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন, ‘৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ২৪ এর গণভ্যুত্থান সবখানেই ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে।
জুম্ম জনগণের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামেও তরুণ এমএন লারমারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। জুম্ম জনগণের দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র আন্দোলনের ফসল ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২৭ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। রাষ্ট্র দীর্ঘ ২৭ বছরেও চুক্তিটি অবাস্তবায়িত রেখেছে। আগামী দিনে চুক্তি বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে কিভাবে চাপ প্রয়োগ করে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করবো তা নির্ধারণ করবে এই ছাত্র-তরুণ সমাজ। তাই আগামী দিনে যারা নবাগত কমিটিতে আসছেন তাদেরই হাতে জুম্ম জনগণের ভবিষ্যৎ। আপনারাই নির্ধারণ জুম্ম জনগণ তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে কি পারবেনা।
সবশেষে, সুশান্ত ত্রিপুরাকে সভাপতি, নিতু ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও সুজীব চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট পিসিপির খাগড়াছড়ি সদর থানা শাখা গঠন করা হয়। এবং জেলিয়ন চাকমাকে সভাপতি, প্রণব ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও বিশাল ত্রিপুরাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট পিসিপির খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কমিটি গঠন করা হয়।
নবাগত কমিটির প্যানেল উপস্থাপন ও শপথবাক্য পাঠ করান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সুভাষ চাকমা।