খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়ায় এক আদিবাসী নারীকে গণধর্ষণ এবং রাঙ্গামাটিতে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার প্রতিবাদ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে খাগড়াছড়ি সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির উদ্যোগে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকমা সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মৃণাল চাকমার সভাপতিত্বে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সভাপতি সুজন চাকমা, সাধারণ শিক্ষার্থী কৃপায়ন ত্রিপুরা, সুমতি বিকাশ চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শাসকের পতনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল সারা দেশের মত পার্বত্য চট্টগ্রামেরও সাধারণ জুম্ম জনগণের উপর দীর্ঘ বছরের যে নিপীড়ন, বঞ্চনা চলে আসছে সেটি দূরীকরণে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বতী সরকার গঠিত হয়েছে তাঁরা আন্তরিক হবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জুম্ম জনগণের অধিকারের সনদ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তরিক প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়নি। উপরন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত উপদেষ্টা জেলা পরিষদ গঠনের বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে পার্বত্য চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্গণের ইঙ্গিত রয়েছে। এই ধরণের বক্তব্য জুম্মজনগণকে নিরাশ করেছে।
এত বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমতল থেকে আশির দশকের দিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসকল বাঙালিদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল এবং এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেই সেটলার বাঙালিরাই পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত নারী, শিশু ধর্ষণের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। রাষ্ট্র নারী নির্যাতনের কোন ঘটনার সুষ্ঠ বিচার নিশ্চিত করেনি, তাই এই ধর্ষণের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। এই ধর্ষকরা রাষ্ট্রের লালিত-পালিত। তাই এর দায় সরকারের, এ দায় রাষ্ট্রের। এর আগে সকাল ১০টায় মহাজনপাড়াস্থ সুর্য্য শিখা ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেঙ্গী স্কয়ারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে পাতাছড়ায় ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ইউসুফ, রানা, ফয়সাল গং এবং রাঙ্গামাটিতে শিশু ধর্ষণচেষ্টাকারী রাইছ মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সারাদেশে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য গত ২২শে আগষ্ট রামগড়ের পাতাছড়ায় এক আদিবাসী নারী গণধর্ষণের শিকার হন এবং গতকাল রাঙ্গামাটির প্রাণ কেন্দ্র বনরূপার সলক মার্কেট এলাকার একটি নির্মানাধিন বাড়িতে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হন আরও এক আদিবাসী শিশু।