সিএইচটি ভ্যানগার্ড

জেলা পরিষদের অনুমোদন ব্যতীত রাঙ্গামাটি জেলায় সাজেকসহ যেকোন স্থানে পর্যটন স্পট ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে তোলা যাবেনা।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাইল করিম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাঙামাটি জেলার সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বাণিজ্যিক ভবন/পর্যটন স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। এতে জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ এর ২২ ধারার লংঘন হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অগ্নি দুর্ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই রাঙামাটি জেলা পরিষদের অনুমোদন ব্যাতিরেকে বাণিজ্যিক ভবন/পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ না করা নির্দেশনা জারি করা হলো।
জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, গত ১৯ মার্চ ঢাকার বেইলী রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবনে এ নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেক অগ্নিকাণ্ডের কারণ, প্রতিকার পাহাড়ের পর্যটন ও পরিবেশ সংশ্লিষ্ট ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো আব্দুল খালেক সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রাশেদা , আমিনুল আসলাম, প্রদীপ কুমার মহোত্তম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুপর্না চাকমা, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং মারমাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতের ঊর্ধ্বতন কর্মর্কারা।
সভায় বলা হয়, রাঙামাটি জেলা পরিষদের হাতে পর্যটন বিভাগ হস্তান্তরিত বিভাগ হলেও জেলা পরিষদের কোনো পরামর্শ না নিয়ে যত্রতত্র পর্যটন এবং বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশ অন্যদিকে স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর জান-মালের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এসব রোধ করার জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিষয়টি যেহেতু জেলা পরিষদের হাতে ন্যাস্ত সেহেতু এটি দেখাশুনা করার জন্য জেলা পরিষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জেলা পরিষদ শিগগিরই একটি প্রবিধানমালা তৈরি করবে।
সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ঐক্যমত্বের তিনি বলেছেন, পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা এ বিষয়টি আগে প্রাধান্য দিতে হবে। পর্যটনের কারণে স্থানীয় পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ুক এবং মানুষের জানমালের ক্ষতি হয় এমন কোনো কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না। সভায় আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্য জেলা পরিষদকে প্রবিধান তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা দেন।
সভায় উপস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং মারমা বলেন, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকে আগুনের ঘটনায় আমাদের সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ও বেশ তৎপর ছিলেন। চেয়ারম্যান মহোদয়ের প্রতিনিধি হয়ে আমি সভায় অংশ নিই। খুব ভালো একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
সূত্রঃ itv.com