সিএইচটি ভ্যানগার্ড
নিশান চাকমা
জুম্ম জনগণের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে বেদনাময় ও মর্মান্তিক একটি দিন ১০ নভেম্বর। ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর ভোর রাতে জুম্ম জনগণের জাতীয় চেতনার অগ্রদূত মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাসহ তাঁর ৮ সহযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে জাতীয় জীবনে এক কলঙ্কময় ইতিহাসের জন্ম দেয় পার্টির ভিন্নমতাবলম্বী বিভেদপন্থী কুচক্রীরা। গিরি, দেবেন, পলাশ, প্রকাশ চক্রসহ দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে যেভাবে জুম্ম জনগণের জাতীয় চেতনার অগ্রদূত মহান নেতাকে হত্যা করে জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামকে চিরতরে নস্যাৎ করে দিতে চেয়েছিল তেমনি ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরোধীতা ও জনসংহতি সমিতি’র নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে নব্য একটি বিভেদপন্থী চক্র দীর্ঘ ২৭টি বছর ধরে একই কায়দায় জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র জারি রেখেছে।
১৯৮৩ সালের গৃহযুদ্ধ জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে কি পরিমাণ ক্ষতি করেছিল তা আমরা সকলে জানি। কিন্তু এত ক্ষয়-ক্ষতির পরও ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর নতুন করে ইউপিডিএফ নামক সংগঠন গঠন করে পাহাড়ের বুকে নতুন করে গৃহযুদ্ধের সূচনা করেছিল প্রসীত-রবিশংকর চক্র। কথায় আছে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া। অতীতের ভুল ভ্রান্তিগুলো ফেলে দিয়ে, খারাপ দিকগুলোকে ফেলে দিয়ে ভালো দিকগুলো গ্রহণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। অথচ প্রসীত বিকাশ খীসারা ’৮৩ এর ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে শিক্ষা না নিয়ে পুনরায় জুম্ম জনগণের মাঝে গৃহযুদ্ধের সূচনা করে ইতিহাসের বুকে কলঙ্কময় একটি অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। তাদের সেই ভুলের মাশুল দীর্ঘ ২৭টি বছর ধরে জুম্ম জনগণ দিয়ে যাচ্ছে। ২৭টি বছর ধরে পাহাড়ে অগনিত লাশ পড়েছে। স্বামী হারা স্ত্রীর আহাজারি, সন্তান হারা পিতা-মাতার আহাজারি, পিতা হারা সন্তানের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পাহাড়ের আকাশ বাতাস।
জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে পাহাড়ে দীর্ঘ দুই যুগের অধিক জুম্ম জনগণের সশস্ত্র সংগ্রামের ফলে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তি স্বাক্ষরের পেছনে হাজার হাজার জুম্ম জনগণের আত্মবলিদান জড়িয়ে আছে, শত শত মা-বোনের ইজ্জত জড়িয়ে আছে এই চুক্তিতে। কত শত জুম্ম জনগণ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন কিন্তু সেই চুক্তিকে বিরোধীতা করে ইউপিডিএফ এত এত মানুষের আত্মত্যাগকে ভুলন্ঠিত করছে।
২০০০ সাল থেকে পাহাড়ে চলমান ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত নিরসণের জন্য জনসংহতি সমিতির সাথে বহুবার সমঝোতা হয়েছে, বৈঠক হয়েছে কিন্তু বারবার ইউপিডিএফ সেই সমঝোতা চুক্তিগুলোকে লংঘন করে পাহাড়ের শান্তি বিনষ্ট করেছে। জনসংহতি সমিতি চেয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য পাহাড়ে বৃহত্তর জুম্ম জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠুক। দলমত নির্বিশেষে পাহাড়ের সকল পক্ষ ঐক্যবদ্ধভাবে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সামিল হোক। কিন্তু আমরা দেখতে পাই সেই চুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে চুক্তিকে নিয়ে নানা অপব্যাখ্যা দিয়ে জুম্ম জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। চুক্তিকে কখনো মূলা চুক্তি, কখনো ’ব’ জিয়ে চুক্তি, কখনো আপোষ চুক্তি ইত্যাদি ব্যাখ্যা দিয়ে পাহাড়ের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। উপরন্তু দীর্ঘ দীর্ঘ ২৭ টি বছর ধরে রাষ্ট্রকে একটি ফুলের টোকা দিতে না পেরেও, রাষ্ট্রকে একটি ছোট্ট আঘাত করতে না পেরেও তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে নতুন একটি চুক্তির কথা বলছেন। যা অত্যন্ত হাস্যকর বলে আমরা ধরে নিতে পারি। কোন যুক্তিতে রাষ্ট্র তাদের সাথে নতুন আরেকটি চুক্তিতে উপনীত হবে তা আমার জানা নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল মূলত জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর হতে জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্বকে চিরতরে বিলুপ্ত করে দেওয়ার জন্য এদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী হীন ষড়যন্ত্র জারি রেখেছে। খসড়া সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক অস্তিত্বকে অস্বীকার করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোসহ দেশের সকল জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে জাতি হিসেবে সকলকে বাঙালি বলে পরিচিত করা হয়েছিল। সেকারণে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা গণ পরিষদে বলেছিলেন “আমি যে অঞ্চল থেকে এসেছি, সেই পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে বাস করে আসছে। বাংলাদেশের বাংলা ভাষায় বাঙালিদের সঙ্গে আমরা লেখাপড়া শিখে আসছি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের কোটি কোটি জনগণের সঙ্গে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সব দিক দিয়েই আমরা একসঙ্গে একযোগে বসবাস করে আসছি। কিন্তু আমি একজন চাকমা। আমার বাপ, দাদা, চৌদ্দ পুরুষ– কেউ বলে নাই, আমি বাঙালি।”
১৯৭২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি জুম্ম জনগণের পক্ষে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট যে স্মারকলিপি দেওয়া হয় তা জুম্ম জনগণের রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ৪ দফা নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক ৪ দফা দাবীনামা ছিল নিম্নরূপ –
১. পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল হবে এবং ইহার একটি আইন পরিষদ থাকবে।
২. উপজাতীয় জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য ১৯০০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির অনুরূপ সংবিধিব্যবস্থা শাসনতন্ত্রে থাকবে।
৩. উপজাতীয় রাজাদের দপ্তর সংরক্ষণ করতে হবে।
৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় নিয়ে কোন শাসনতান্ত্রিক সংশোধন বা পরিবর্তন যেন না হয়, এরূপ সংবিধিব্যবস্থা শাসনতন্ত্রে থাকবে।
আজকে যদি আমরা দেখি পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আন্দোলনের আগাগোড়াই ছিল জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। জুম্ম জনগণকে জাতিগতভাবে নির্মুলীকরণের ষড়যন্ত্র হিসেবে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ৪ দফা দাবীনামা পেশ করা হয়েছিল তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন পাহাড়ে সমতল থেকে লক্ষ লক্ষ বাঙালি ডুকিয়ে দিয়ে জুম্মদেরকে সংখ্যালঘু করবেন। আজকের এ পর্যায়ে এসে আমরা তারই প্রতিফলন দেখতে পাহাড়ে আজ জুম্মদের থেকে সেটেলার বাঙালিদের সংখ্যা বেশী হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৮০’র দশকে জিয়া সরকার ও এরশাদ সরকার পাহাড়ে সমতলের পাড় ভাঙা, গরীব অসহায় বাঙালিদের জুম্মদের বিরুদ্ধে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভূমি বেদখল ইত্যাদি করে জুম্মদেরকে পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে দেশান্তরী করা হয়েছে। জুম্মদের ভূমিতে জুম্মদেরকে সংখ্যালঘু বানানো হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা জুম্মদের জাতীয় অস্তিত্বের সমস্যা। ১৯৭২ সাল থেকে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জুম্ম জনগণ তাদের সংগ্রাম পরিচালনা করে আসলেও বর্তমান পর্যন্ত আজো সেই সমস্যা থেকে আমরা একচুলও উত্তরণ ঘটাতে পারিনি।
১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণ হবে এই আশা সমগ্র জুম্ম জনগণ করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের কোন সরকারই পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখায়নি। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় হতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি বিরোধীতা করেছিল, সাথে এদেশের নানা রাষ্ট্রীয় মহল চুক্তি বাস্তবায়নে বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল। চুক্তি বিরোধী নানা গোষ্ঠী সৃষ্টি করে দিয়েছিল। পূর্বে বাঙালি ছাত্র পরিষদ বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, সমধিকার আন্দোলনসহ সেটেলার বাঙালিদের নানা সংগঠন সৃষ্টি রাষ্ট্রীয় বিশেষ মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে জিইয়ে রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। একই সাথে রাষ্ট্রীয় বিশেষ মহলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় ইউপিডিএফ নামক দল গঠন করিয়ে দিয়ে “ভাগ কর শাসন কর” নীতি প্রয়োগ করে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন তথা জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দিতে চেয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বিশেষ মহলের সহযোগীতায় ১৯৯৭ সালে চুক্তি বিরোধীতাকারী ইউপিডিএফ গঠন করে দিয়ে পাহাড়ের সমস্যা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে দিয়ে জুম্ম দিয়ে জুম্ম ধ্বংসের নীল নকশা এখনো চলমান রয়েছে। সেটেলার বাঙালিরা চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা, তাদের সংগঠনগুলো চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা, সেনাবাহিনী চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা, বিএনপি চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা, আওয়ামীলীগ চুক্তি স্বাক্ষর করলেও তারা আদৌতে চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা তাদের সাথে পাহাড়ের জুম্মদের অধিকারের কথা বলা ইউপিডিএফ চুক্তি বাস্তবায়ন চাইনা। সাথে উপরিউক্ত উল্লেখ করা সংগঠনগুলো কেউই আদিবাসী হিসেবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাইনা। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি ইউপিডিএফ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ, সমঅধিকার আন্দোলন, নাগরিক পরিষদ, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সকলেই একই সূত্রে গাঁথা এবং তারা জুম্ম জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। সুতরাং যারা জুম্ম জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
জনসংহতি সমিতি এবং চুক্তি পক্ষীয় জুম্ম জনগণ মনে করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব এবং জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণ সম্ভব সেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে জুম্মদের সকল দলগুলোকে একই কাতারে একই সারিতে এসে আন্দোলনে সামিল হতে হবে। আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য সর্বপ্রথম শর্ত হচ্ছে শত্রু কে এবং মিত্র কে নির্ধারণ করা। একইসাথে মূখ্য শত্রু এবং গৌণ শত্রু নির্ণয় করা। সাম্রাজ্যবাদ, উগ্র জাতীয়তাবাদ, সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ, মৌলবাদ, সম্প্রসারণবাদ, সামন্তবাদই হলো জনসংহতি সমিতির মূখ্য শত্রু একই সাথে যারা এসবের ধারক এবং বাহক তারাও আমাদের শত্রু। সুতরাং আমরা মনে করি যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরোধীতা করছে, যারা চুক্তিকে নিয়ে নানা কটু কথা বলছে তারাও আমাদের শত্রু। এবং যারাই এই চুক্তিই বিরোধীদের সমর্থন যুগাচ্ছে তারাও আমাদের শত্রু হিসেবে পরিগণিত হবে।
ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতির মধ্যেকার বহুবার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, বৈঠক হয়েছে কিন্তু মতাদর্শগত মিল না থাকার কারণে তা বহুবার ভেস্তে গিয়েছে। জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই সেকারণে ইউপিডিএফের উচিত পূর্ণসায়ত্তশাসন নামক আষাঢ়ে গল্পের কল্পনা নিয়ে না থেকে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সামিল হতে। না হলে ১৯৮৩ সালে যেভাবে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে জুম্ম জনগণ বিভেদপন্থী চক্রকে যেভাবে উৎখাত করেছিল তেমনি তাদেরকেও সেভাবে উৎখাত হতে হবে। এবং জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় পরিগণিত হতে হবে।
মহান নেতা এমএন লারমা যেমন জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, আজকে তাঁর ৪১তম প্রয়াণ দিবসের প্রাক্কালে এসে আমরা শপথ নিই পাহাড়ে জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী চক্রদের উৎখাত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন তথা আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে জোরদার করি। মহান নেতার স্বপ্ন জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্বকে সংরক্ষণ করি।
লেখকঃ সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।