খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২৭তম বর্ষে “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে চুক্তি বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলুন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম খাগড়াছড়িতে গণসমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। সকাল ১০ ঘটিকার সময়ে খাগড়াছড়ি সদরের মারমা উন্নয়ন সংসদ মিলনায়তনে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সমীর চাকমা ও রাজ্যময় চাকমার সঞ্চালনায় এবং জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা, জনসংহতি সমিতি জেলা শাখার সভাপতি শোভা কুমার চাকমা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কাকলী খীসা, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর সাধারণ সম্পাদক মিটন চাকমা ও সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ রবিশংকর চাকমা, ধীমান খীসা প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত মৌলিক বিষয়গুলো চিহ্নিত করে একটি রোডম্যাপের ভিত্তিতে চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায় সেই লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি পুনর্গঠন করার দাবী জানান।
বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে ‘৯৭ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু, চুক্তি স্বাক্ষরের দীর্ঘ ২৭ বছরেও চুক্তির মৌলিক ধারাগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। চুক্তির স্বাক্ষরকারী অন্যতম পক্ষ প্রায় দেড় দশক ক্ষমতায় থাকার পরও আওয়ামীলীগ সরকার চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না করে বরং প্রতিনিয়ত চুক্তি লঙ্ঘন করে গিয়েছিলেন। ফলে চুক্তি পূর্ববর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম যে ধরণের রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে ছিল এখনও সমস্যাটির সমাধান হয়নি বরং রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত করা হচ্ছে।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত সাবেক এমপি বীর বাহাদুর উশৈসিং, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, দীপঙ্কর তালুকদারকে চুক্তি বিরোধী আখ্যায়িত করে বলেন, নিজেরাই চুক্তির সুফল ভোগ করে লুতেপুতে খেয়েছিলেন কিন্তু চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে তারা কোন কার্যকর ভূমিকায় পালন করেননি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও দেখা যাচ্ছে একই কায়দায়, জুম্ম জনগণের প্রতিনিধিদের মতামত উপেক্ষা করে জেলা পরিষদগুলোতে অযোগ্যদেরকে দিয়ে পূণর্গঠন করা হয়েছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে বিগত সরকারগুলোর মত জিইয়ে রাখার অপচেষ্টার সামীল। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ চুক্তি বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার মাধ্যমে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের ডাক দেন।