সিএইচটি ভ্যানগার্ড, পানছড়ি প্রতিনিধি
“চলমান সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় এমএন লারমা’র ৭২ এর সংবিধান দর্শনই হোক শোষণ- বৈষম্যহীন, দারিদ্র্যমুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম হাতিয়ার” এই স্লোগানে জুম্ম জাতীয় চেতনার অগ্রদূত, জনসংহতি সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সাংসদ মহান নেতা এম’এন লারমা’র ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জুম্ম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি,পানছড়ি থানা শাখা ও বন্ধুপ্রতীম সংগঠন ইউপিডিএফ(গণতান্ত্রিক) সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা শ্রীমতি:রত্না তঞ্চঙ্গ্যা। ইউপিডিএফ(গণতান্ত্রিক) পানছড়ি শাখার সংগঠক বিজয় চাকমা।
স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষক শ্রী জ্ঞান প্রভাত তালুকদার; খাগড়াছড়ি জেলা কার্বারী এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক হেমরঞ্জন চাকমা; সূতকর্মা পাড়া কার্বারী শ্রী:মলয় দেওয়ান সহ প্রমুখ।
আজ সকাল (১০ নভেম্বর ২০২২৪) ৭ঃ৩০ মিনিটে অস্থায়ী শহীদ ভেদীতে সকল বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন পার্টির নেতৃবৃন্দ ও অত্র পানছড়ি এলাকার সুশীল সমাজের নেতৃবর্গ ।
উক্ত স্মরণসভায় জনসংহতি সমিতি পানছড়ি থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জগদানন্দ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় মধ্যে দিয়ে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জনসংহতি সমিতি পানছড়ি থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অমল চাকমা। স্মরণসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের পানছড়ি শাখার সংগ্রামী সভাপতি রিমেশ চাকমা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জ্ঞান প্রভাত তালুকদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের মূখ্য হাতিয়ার বৃহত্তর জুম্ম জাতীয় ঐক্য। তাই পাহাড়ে স্বাধীকার -অধিকার পেতে হলে বৃহত্তর জুম্ম জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। পাহাড়ে দীর্ঘদিন যাবত ধরে জুম্ম জনগণের ক্রান্তিকাল চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আর হানাহানি যুদ্ধ-বিগ্রহ চাই না। চাই অধিকার আর মুক্তি।
খাগড়াছড়ি জেলা শাখার কার্বারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেমরঞ্জন চাকমা বলেন পাহাড়ে সাধারণ মানুষের মুক্তি দরকার, শান্তি দরকার। শান্তি ফিরবে একমাত্র ঐক্যতায়।
তিনি আরো বলেন ১০ নভেম্বর ১৯৮৩ সনে হত্যাকান্ডের ঘটনা খুবি মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক।
সূতকর্মা পাড়ার কার্বারি মলয় দেওয়ান বলেন, ঐক্য গড়তে হলে দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে জটিল সমস্যাগুলো রাজনৈতিকভাবে নিরসন করা সবচেয়ে উত্তমপন্থা। আমরা সাধারণ জুম্ম জনগণ সবসময় পাহাড়ের সমস্যা নিরসনে পাশে থাকবো।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে শ্রীমতি রত্না তঞ্চঙ্গ্যাঁ বলেন, পাহাড়ে জুম্ম জনগণের রাজনৈতিক অধিকার দরকার। এই রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য চাই পাহাড়ের সকল আঞ্চলিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। কিন্তু এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কিভাবে গড়ে উঠবে? ভিন্ন মতের দুটি রাজনৈতিক দাবি নিয়ে ঐক্য সম্ভব নয়। চুক্তি বিরোধীরা আসুক, চুক্তি উপেক্ষা করে নয় চুক্তিকে সাদরে গ্রহণ করে। আমরা সংঘাত চাই না। সংঘাত চাওয়া মানে এটা পাহাড়ে জুম্ম জনগণের জন্য অমঙ্গলজনক।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের যুগপৎ আন্দোলনের ভিতিতে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এই চুক্তিকে বিভিন্নভাবে অপব্যাখ্যা না দিয়ে চুক্তি মানলে সব জটিল সমস্যার নিরসন ঘটবে। ইউপিডিএফ সংগঠনকে বলে দিতে চায় এটা আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জাতীয় মুক্তির সনদ। জাতির ক্রান্তিকাল চলছে, তাই আপনারা যদি জাতিকে ভালোবাসেন শান্তিতে থাকতে দিন।