খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি ভ্যানগার্ড
খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদী থেকে এক ইউপিডিএফ কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪) দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি বাজারের পুরাতন গরুর হাটের কাছে চেঙ্গী নদীতে একটি লাশ ভেসে যেতে দেখেন সাধারণ লোকজন।
লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যান। লাশটির পরিচয় নিয়ে সারাদিন সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা চলছিলো। কিন্তু লাশটির পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিলো না। পরে লাশটি সনাক্ত করেন নিহতের স্ত্রী।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত পরশুদিন (৮ সেপ্টেম্বর) রাতের বেলা কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হন। রাত গভীর হলেও বাসায় না ফেরাই তাঁর নাম্বারে বার বার ফোন দিয়েও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল, এর পর থেকে ত্রিপন চাকমার আত্মীয়-স্বজনেরা তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে ইউপিডিএফ এর নেতৃবৃন্দের সাথে পারিবারিকভাবে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুনাম চাকমাকে আর পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এতে নিহতের স্ত্রী কান্নাভেজা চোখে বেরিয়ে আসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ত্রিপন চাকমা দীর্ঘ বছর যাবৎ পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ বছর যাবৎ ইউপিডিএফের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও বেশ কয়েকমাস যাবৎ সংগঠনের কর্মকান্ড নিয়ে থেকে সংগঠনের বিভিন্ন কর্মীবাহিনীর সাথে নানা বিষয়ে বনিবনা হচ্ছিল না। তাই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সূত্রটি আরো জানায় ত্রিপন চাকমাকে কৌশলে খাগড়াছড়ি সদরের পেরাছড়া ইউনিয়নের বাউরো পাড়া এলাকায় ডেকে নিয়ে মাথায় এবং মুখে নৃশংসভাবে উপুর্যপুরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে চেঙ্গী নদীতে ফেলা হয়। ঘটনাটি গতকাল (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সংঘটিত হয়।
ত্রিপন চাকমার নিজ বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ির ক্যায়াংঘাট ইউনিয়নের গোলাক্কে আদাম এলাকায় হলেও পরবর্তীতে একই ইউনিয়নের পূর্ব মানিকছড়ি এলাকায় স্থানান্তরিত হন এবং বর্তমানে পরিবার নিয়ে খাগড়াছড়ি সদরের খবংপড়িয়া এলাকায় বসবাস করছিলেন বলে জানা যায়। নিহত ত্রিপন চাকমার ৮ বছরের একমাত্র সন্তান স্বনির্ভর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে ইউপিডিএফ এর অভ্যন্তরে চরম হতাশা এবং নেতৃত্বের এমন সিদ্ধান্তে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র।