খবর প্রকাশে বৈষম্যের অভিযোগঃ জনমনে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা কয়েকদিনের বর্ষণ এবং ভারত থেকে পানি নামতে থাকায় কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন হওয়ার খবর জানা গিয়েছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য অঞ্চলের খবর প্রকাশে জনদুর্ভোগের বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে পর্যটক আটকে পড়ার খবরগুলোকে অত্যধিক প্রাধান্য দিয়ে খবর প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে, এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশসহ বিভিন্ন সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গণমাধ্যমে পাঠানো ‘আদিবাসী শিল্পী ঐক্য’র বার্তায় কয়েকটি গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করে বলা হয় – কতিপয় জাতীয় গণমাধ্যমের এই একচোখা নীতিই জানান দেয় যে, পার্বত্য এলাকার জনগণের জানমালের মূল্য নেই এবং পার্বত্য এলাকার জনগণের উপর তাদের নজরের চাইতে বরং সড়ক ডুবে যাওয়ায় আটকে পড়া পর্যটকদের উপর নজর বেশি। যেখানে ফেনী, নোয়াখালি, কুমিল্লার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে, সেখানে গণমাধ্যমসমূহের একচোখা নীতির কারণে খাগড়াছড়ি জেলার সদর ও অন্যান্য উপজেলা সমূহের বন্যার পরিস্থিতি এবং জনগণের বন্যাকবলিত হয়ে গৃহবন্দী হওয়ার দুরাবস্থা, কোন কোন এলাকার স্কুল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবরের চেয়ে পর্যটকের আটকে পড়াকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ সেলুকাস বৈ কিছু নয় বলে Indigenous Artists’ Unity মনে করে।

একই বার্তায় গ্রাফিতি অঙ্কনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে জানানো হয়, বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনা ক্যাম্প থেকে গ্রাফিতি অংকনের জন্য অনুমতি নিতে বাধ্য করা হয়েছে । খাগড়াছড়ি সদরের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে, কল্পনা চাকমার গ্রাফিতি মুছে দেওয়া হয়েছে, সেনা শাসন বন্ধ করার দাবির স্লোগান মুছে দেওয়া হয়েছে। রাঙ্গামাটি সদরের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা আমরা অবলোকন করেছি। এমনকি খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার বিগত ১১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গ্রাফিতি অংকনরত ছাত্র-ছাত্রীদের এসে বলেছেন যে, পাহাড় থেকে সেনা শাসন তুলে নাও বললে তাদের মন খারাপ হয়ে যায়।

ক্ষোভের বিষয়টি উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টেও। রবি বিকাশ চাকমা (Rabi Bikash Chakma) একটি অনলাইন পোর্টালের দু’টি নিউজের ছবি পাশাপাশি জুড়ে দিয়ে লিখেছেন – “ছবি দুটির পার্থক্য বুঝতে পারছেন? ফেনীতে মানুষ বাস করে আর পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন ছাড়া কেউই নেই? ফেনীর বন্যায় স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়ে আর খাগড়াছড়ির বন্যায় পর্যটক দুর্ভোগে পড়ে ফেনীতে গ্রাম প্লাবিত হয় আর খাগড়াছড়িতে শুধু রাস্তা প্লাবিত হয়”।

অপরদিকে, পানিবন্দি দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে ফান্ড গঠন এবং স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনসহ অন্যান্য সামাজিক এবং ছাত্রসংগঠনগুলো।

উল্লেখ্য, টানা বৃষ্টির কারণে ১৮ দিনের ব্যবধানে আবারও বন্যা ও পাহাড়ী ঢলে বিপর্যস্ত খাগড়াছড়িবাসী। চলতি মৌসুমে চতুর্থ বারের মত বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রায় বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ।

Tags: , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

বন্যা কবলিত বাঘাইছড়ি
পানিবন্দি খাগড়াছড়ি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu