কিউবায় ছয় দশকের ক্যাস্ত্রো যুগের অবসান

আন্তর্জাতিক

নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন রাউল

ভ্যানগার্ড ডেস্ক

কিউবায় ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন রাউল ক্যাস্ত্রো। এর মাধ্যমে দ্বীপদেশটিতে ক্যাস্ত্রো পরিবারের প্রায় ছয় দশকের শাসনের অবসান হচ্ছে। ৮৯ বছর বয়সি রাউল জানিয়েছেন, তিনি ‘তীব্র ইচ্ছাশক্তি এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনায় পরিপূর্ণ নবীন প্রজন্মের কারও হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দিতে চান। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে ক্যাস্ত্রো পরিবারের কিউবা শাসন, যা শুরু হয়েছিল বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর হাত ধরে।

রাউল ক্যাস্ত্রো জানিয়েছেন, কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি। শুক্রবার দলীয় কংগ্রেসে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের এ বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেন। এর মধ্য দিয়ে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টিতে তার পরিবারের ছয় দশকের নেতৃত্বের অবসান হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।

রাউল চার দিনের দলীয় কংগ্রেসের প্রথম দিনে একটি ভাষণে বলেন, তার আশা নবীন নেতৃত্ব নিখাদ আবেগ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনায় দলকে এগিয়ে নেবে এবং দলীয় আদর্শের প্রতি অনুগত থাকবে। ২০১৬ সালের আগের দলীয় কংগ্রেসে ‘ঐতিহাসিক প্রজন্ম সর্বশেষ নেতৃত্বে এসেছিল। এখন থেকে নবীন নেতৃত্ব দলকে উপযুক্ত দিকনির্দেশনা দেবে। ১৯৫৯ সালে বিপ্লবের মাধ্যমে রাউলের বড় ভাই ফিদেল ক্যাস্ত্রো কিউবার আনুষ্ঠানিক নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, যা রাউলের নেতৃত্ব ছাড়ার মাধ্যমে শেষ হচ্ছে। ৬০ বছর বয়সি মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেলের কাছে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন রাউল। জাতীয় সরকারের নেতৃত্বে আসার আগে মিগুয়েল দুটি প্রদেশে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। হাভানায় কংগ্রেসে দলীয় প্রতিনিধিদের উদ্দেশে রাউল বলেন, ‘সহযোদ্ধাদের শক্তিমত্তা, স্বভাবজাত অনুকরণ ও প্রজ্ঞার ওপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। দেশবাসীও তাদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।’ রাউল ক্যাস্ত্রোর বিদায়ে যে নবীন নেতারা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে আসছেন, তারা কিউবার বিপ্লবের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। বর্তমানে কিউবা ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই প্রথম এতটা সংকটে পড়েছে দেশটি। ধারণা করা হচ্ছে, তরুণ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশটি এ সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে পাবে। ফিদেল ক্যাস্ত্রোর পর ২০১১ সাল থেকে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন রাউল। ১৯৫৯ সালে ফিদেল ক্যাস্ত্রো যখন বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন, রাউল ছিলেন তার অন্যতম কমান্ডার। ২০০৬ সালে অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত ফিদেল দেশটির নেতৃত্বে ছিলেন এবং ২০০৮ সালে তিনি প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দেন। এরপর ২০১৬ সালে মারা যান ফিদেল ক্যাস্ত্রো।

রাউল ক্যাস্ত্রোর নেতৃত্বে কিউবার একক ক্ষমতা পায় কমিউনিস্ট পার্টি। তার সময়েই ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে চির বৈরী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিউবার সম্পর্কের উন্নয়ন হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ঐতিহাসিক আলোচনায় বসেন রাউল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে এ সম্পর্কের ফের অবনতি ও নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ট্রাম্প প্রশাসন কিউবার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দেয়। চার দিনব্যাপী দলীয় কংগ্রেসে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন ক্যাস্ত্রো-পরবর্তী যুগে কিউবার প্রথম শীর্ষ নেতা।

সূত্রঃ যুগান্তর

Tags: ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

গুইমারায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক এক জুম্ম নারীকে মারধরের অভিযোগ
কুয়াকাটায় বেহাত হচ্ছে রাখাইনদের সম্পদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu