পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাতিলের প্রতিবাদ

খাগড়াছড়িপার্বত্য চট্টগ্রাম

আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী

সিএইচটি ভ্যানগার্ড

নবম-দশম শ্রেণীর “বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি” পাঠ্য বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে “আদিবাসী” শব্দযুক্ত গ্রাফিতি এনসিটিবি কর্তৃক বাতিলের প্রতিবাদে ও আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবীতে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও আদিবাসী ছাত্র সমাজের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মিছিলটি শহরের মহাজন পাড়াস্থ সূর্যশিখা ক্লাব প্রাঙ্গণ হতে বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেঙ্গী স্কোয়ারে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনতোষ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুভাষ চাকমা, পিসিপি দীঘিনালা থানা শাখার সদস্য সুবরণ চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিশান চাকমা; এবং আদিবাসী ছাত্র সমাজের পক্ষে তুষন চাকমা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনেন্টু চাকমা।

সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নামধারী “স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি” নামক ভুঁইফোড় সংগঠনের কিছু উগ্র জাতীয়তবাদী এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে নবম-দশম শ্রেণীর “বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি” পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে আদিবাসী শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাতিলের দাবী জানায়। এর পরবর্তী এনসিটিবির ওয়েবসাইটে দেওয়া অনলাইন ভার্সনে (পিডিএফ) দেখা যায় গ্রাফিতিটি বাদ দিয়ে নতুন আরেকটি গ্রাফিতি যোগ করা হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, গতকাল সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া তথাকথিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান আদিবাসী শব্দটির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা নাকি বহিরাগত এবং শরনার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সমাবেশ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। স্মরণাতীতকাল থেকে এ অঞ্চলে আদিবাসীরা ছিল, ভারতীয় উপমহাদেশে হাজারের অধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী রয়েছে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তি এবং পরবর্তী বাংলাদেশের উদ্ভব হলেও আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীরা তাদের স্ব-স্ব স্থানেই রয়ে গেছে। সুতরাং এসব মিথ্যাচার করে আদিবাসী জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না করার আহ্বান জানানো হয়।পাশাপাশি সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নেরও দাবী জানানো হয়।

সমাবেশ থেকে কিছু দাবী জানানো হয়।

দাবীগুলো হলোঃ

১। পাহাড় ও সমতলে বসবাসরত আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে;

২। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে;

৩। আদিবাসীদের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে;

৪। আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে;

৫। সমতলের আদিবাসীদের পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে;

৬। আদিবাসীদের কৃষি-সংস্কৃতি-প্রথা-ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশের উদ্যোগ নিতে হবে;

৭। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে; এবং

৮। বাদ দেয়া আদিবাসী শব্দযুক্ত গ্রাফিতি পুনর্বহাল করতে হবে।

Tags: , , , , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ বদল, তিন আদিবাসী সংগঠনের প্রতিবাদ
মহিলা সমিতি’র সভাপতি কাকলী খীসা, সম্পাদক রত্না তঞ্চঙ্গ্যা

1 Comment. Leave new

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu