খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি সদর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ (পাঁচ) শিক্ষার্থী অপহৃত হওয়ার তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও উদ্ধার/মুক্তি না মেলা এবং রাঙ্গামাটির কাউখালীতে এক আদিবাসী শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করেছে খাগড়াছড়িস্থ আদিবাসী ছাত্র সমাজ।

আজ (২০ এপ্রিল ২০২৫) সকাল ১০ টার সময়ে শহরের মহাজনপাড়াস্থ সূর্যশিখা ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা কোর্ট ফটকে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শত শত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে জনোত্তম চাকমা সঞ্চালনায় এবং খাগড়াছড়ি কলেজের শিক্ষার্থী তুষন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি কলেজের শিক্ষার্থী সুমতি বিকাশ চাকমা, মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মায়া চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রহেল চাকমা। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন টিএসএফ’র সদর থানা কমিটির সভাপতি আকাশ ত্রিপুরা, বিএমএসসি খাগড়াছড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক উক্যনু মারমা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুজন চাকমা।
সমাবেশে সংহতি বক্তব্যে পিসিপি’র সভাপতি সুজন চাকমা (ঝিমিট) বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ যখনই কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে শুরু করেন তখনই একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষি গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠে চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ। চুক্তি পরবর্তী সময়ে যখন চুক্তি মোতাবেক সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা শুরু হয় তখনই তিন বিদেশী অপহরণের মাধ্যমে ‘অপারেশন উত্তরণ’র নামে সেনাশাসন জারি রাখার বৈধতা প্রদান করেছে ইউপিডিএফ। বিভিন্ন মিছিল সমাবেশে সেনাশাসনের বিরোধী কথা বললেও কাজে কর্মে সেনা শাসনকেই বৈধতা দিয়ে চলেছে এই সংগঠনটি। যার আরেকটি বড় প্রমাণ এই শিক্ষার্থীদেরকে অপহরণসহ ১ সপ্তাহের মধ্যে তিনটি অপহরণের ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, জুম্ম জনগণ আন্দোলন দমনে রাষ্ট্র সেটেলম্যান্ট করেছিল। সেই সেটলারেরা প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখল, নারী ধর্ষণের মত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গেলে নানা অজুহাতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে।
সমাবেশ থেকে অনতিবিলম্বে নিঃশর্তে অপহৃতদের মুক্তি প্রদান এবং ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মোঃ ফাহিমকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টামূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়, অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেন।
সমাবেশ শেষে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা একই দাবীতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।