বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি ভ্যানগার্ড
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রয়াত বিভূ রঞ্জন চাকমার স্মরণে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের বাবুপাড়াতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বাঘাইছড়ি থানা কমিটি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসংহতি সমিতি বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি জ্ঞানজীব চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জ্যোসি চাকমার সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সংগ্রামী সহ-সভাপতি সুরেশ কান্তি চাকমা প্রমূখ।
সভার শুরুতে প্রয়াত বিভূ রঞ্জন চাকমার স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনসংহতি সমিতি বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক জ্ঞানসিন্ধু চাকমা। এছাড়াও সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সুকেশ চাকমা, যুব সমিতি বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি নিউটন চাকমা, যুব সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমর জীবন চাকমা, যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুদর্শন চাকমা ও জনসংহতি সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সদস্য বাবুধন চাকমা প্রমূখ।
বক্তারা প্রয়াত বিভূ রঞ্জন চাকমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। বক্তারা বলেন বিভূ রঞ্জন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়ের সংগ্রামে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অবিচল ছিলেন। বক্তারা বলেন ষাটের দশকে কলেজে পড়াকালীন সময় হতে তিনি পাহাড়ী ছাত্র সমিতির সাথে যুক্ত থেকে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। সত্তরের দশকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি গঠিত হলে তাঁর সাথে যুক্ত হয়ে একপর্যায়ে ৮১-৮২ সালের দিকে ২ নং সেক্টরে সহকারী পলিটিক্যাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ‘৮৩ সালে গৃহযুদ্ধের সময় স্বাভাবিক জীবনে কিছু সময়ের জন্য ফিরে এলেও তিনি পরবর্তীতে পুনরায় সংগঠনে যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে সরকারের সাথে চুক্তি সম্পাদিত হলে তিনিও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। চুক্তি পরবর্তী সময়েও তিনি জনসংহতি সমিতির সাথে জড়িত থেকে আমৃত্যু জুম্ম জনগণের জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে একজন যোদ্ধা ছিলেন।
বক্তারা বলেন, তার মৃত্যুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, ত্যাগী, আদর্শবান কর্মীকে হারিয়েছে এবং জুম্ম জনগণ হারিয়েছে পাহাড়ের একজন সেবক ও অকৃত্রিম এক বন্ধুকে। তার অভাব আমাদের সংগঠন ও জুম্ম জনগণ কখনো পূরণ করতে পারবেনা বলেও বক্তারা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদরস্থ পানখাইয়া পাড়ার তার ভাড়া বাসায় তিনি মাইল্ড স্ট্রোক করেন বলে জানা যায়, এরপর খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎস্ক অবস্থার অবনতি দেখে চট্টগ্রামে রেফার করেন। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং রাত আনুমানিক ৯.৩০ মিনিটে চট্টগ্রামে ও আর নিজাম রোডের মেডিকেল সেন্টার হসপিটালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।