পিসিপির দীঘিনালা থানা শাখার কাউন্সিল সম্পন্ন

পার্বত্য চট্টগ্রাম

ভ্যানগার্ড প্রতিবেদক

“জাতিয় বেঈমান চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফ (প্রসীত) নিপাত যাক জুম্ম জাতি মুক্তি পাক”; “পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবী আদায়ের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলুন” এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ১৫ই অক্টোবর জনসংহতি সমিতি’র দীঘিনালা থানা কার্যালয়ে “পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ”,দীঘিনালা থানা শাখার ২৪তম কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময়ে জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মহান পার্টি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী- প্রণব চাকমা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ দীঘিনালা থানা শাখার বিদায়ী কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী- সুনেন্টু চাকমা। সম্মেলনের শুরুতে এযাবতকালের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়।

সম্মেলনে বিদায়ী কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী- সুনেন্টু চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী- প্রণব চাকমা। বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শ্রী- প্রীতিময় চাকমা (ডাঃ যুগল); পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী- সুদর্শন চাকমা; পিসিজেএসএস খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী- আরাধ্যপাল খীসা; পিসিজেএসএস রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শ্রী- সুমেধ চাকমা; পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী- জ্ঞানপ্রিয় চাকমা; পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী- রাজ্যময় চাকমা; পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী- জুনান চাকমা।

প্রধান অথিতির বক্তব্যে শ্রী প্রণব চাকমা বলেন- জুম্ম জনগণের দীর্ঘ ২৪ বছরের সশস্ত্র সংগ্রামের বিনিময়ে অর্জিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি আজ স্বাক্ষরের ২২টি বছর অতিক্রান্ত হলেও সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি করে যাচ্ছে। বলা যায় সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়। চুক্তি স্বাক্ষরের প্রাক্কালে চুক্তিবিরোধী অপশক্তি ইউপিডিএফের উদ্ভব না হলে পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের উদ্ভব হতোনা, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন তীব্রতরভাবে বেগবান হতো এবং এতদিন চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন পার্বত্যবাসী প্রত্যক্ষ করতে পারতো বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি ইউপিডিএফ (প্রসীতপন্থী)কে চুক্তির বিরোধীতা থেকে সরে এসে জুম্ম জনগণের মুক্তির সনদ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

সম্মেলনে সংগঠনটির বিভিন্ন কলেজ, উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ দীঘিনালা কলেজ শাখার সংগ্রামী সভাপতি শ্রী টিক্ন চাকমা; মহালছড়ি থানা শাখার সংগ্রামী সভাপতি শ্রী- সুভাষ চাকমা, পানছড়ি থানা শাখার সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী- অসীম চাকমা। এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দসহ পিসিপি, যুব সমিতি, মহিলা সমিতি ও জনসংহতি সমিতির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, পাহাড়ে বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। জুম্ম জনগণ পেছনে সরে যেতে যেতে যাওয়ার আর পথ খোলা নেই, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার কঠিন ইস্পাত সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।

বক্তারা আরও বলেন, পাহাড়ে একটি সংগঠন প্রতিনিয়ত ভ্রাতৃঘাত বন্ধের নামে নাটক মঞ্চস্থ করে চলেছে। ঐক্য রাজপথে,বনে-বাদাড়ে মিছিল-মিটিং করে হয়না, ইউপিডিএফ(প্রসীতপন্থী) যদি সত্যিকারের ঐক্য চায় তবে আলোচনার টেবিলে বসুক বলে বক্তারা মন্তব্য করেন। আদর্শিক ঐক্য গড়ে না উঠলে ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী হবেনা বলেও তারা বলেন এবং চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামের একাত্ম হয়ে আদর্শিক ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একি সাথে সন্তু লারমার দলের প্রতি হিংস্রতা, আত্মঅহংকার, সেচ্ছাচারিতা, উগ্রতা পরিহার করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সম্মেলনে সম্ভাব্য প্যানেল উপস্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী- রাজ্যময় চাকমা এবং প্রতিনিধি-পর্যবেক্ষকবৃন্দের সমর্থনে কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে পাশ করা হয়।

সম্মেলনে পুরাতন কমিটিকে বিলুপ্তি ঘোষণা করে মৃণাল চাকমাকে সভাপতি; রিংকু চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও নেচার চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। নবাগত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি শ্রী- জুনান চাকমা।

Tags:

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

দুর্গারূপে আবির্ভূত পরিযায়ী শ্রমজীবী-মা
অধ্যাদেশ জারির পর দেশে প্রথম মৃত্যুদণ্ডঃ ধর্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu