ঢাকা ও চট্টগ্রাম প্রতিনিধি, সিএইচটি ভ্যানগার্ড
জুম্ম জাতির বিপ্লবী চেতনার অগ্রদূত মহান নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা’র ৮৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র সহযোগী সংগঠন আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য এবং ছবি নিয়ে প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে।
ঢাকা:
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধা ৬.৩০ ঘটিকার সময়ে আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতি, ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে, মহান বিপ্লবী নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এম এন লারমা) ৮৫তম জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির আশুলিয়া, সাভার, ঢাকায় মহানগর কার্যালয়ে এঈ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শুরুতে মহান নেতা এম এন লারমাসহ সকল জুম্ম বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয় এবং কেক কাঁটার মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভা শুভ সুচনা করা হয়।
আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতি, ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আনন্দ বিকাশ চাকমার সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির অন্যতম সদস্য শিল্পী চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রিপন চাকমা, সখুমার চাকমা, নিটন চাকমা প্রমুখ।
আনন্দ বিকাশ চাকমার সমাপনী বক্তব্য মহান বিপ্লবী নেতা এম এন লারমার আত্মজীবনী স্মৃতি চারণ করেন এবং এম এন লারমার আদর্শে উজ্জীবীত হয়েই জুম্ম জাতির জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে ছাত্র, যুব সমাজের ইস্পাত ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম:
“শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হোন”। নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত – বঞ্চিত ও অধিকারকামী গণমানুষের সংগঠন “পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র” প্রতিষ্ঠাতা, জুম্ম জাতীয় চেতনার অগ্রদূত, জুম্ম জনগনের পরম বন্ধু অবিসংবাদিত মহান নেতা সাবেক সাংসদ শ্রী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা’র ৮৫তম জন্মদিবস উপলক্ষে আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র সহযোগী সংগঠন আদিবাসী শ্রমজীবি কল্যাণ সমিতি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে মহানগর কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শুরুতে মহান নেতা এম এন লারমাসহ সকল জুম্ম বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয় এবং কেক কাঁটার মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভা শুভ সুচনা করা হয়।
আলোচনা সভায় আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি নিকোলো চাকমার সভাপতিত্বে, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অর্পিন চাকমা সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সদস্য সুপেন চাকমা।
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখেন পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সুনয় চাকমা, বন্দর থানা শাখার সভাপতি রমেশ্বর চাকমা, সুপেন চাকম প্রমুখ। এছাড়াও আদিবাসী শ্রমজীবী কল্যাণ সমিতি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা ও চট্টগ্রাম বন্দর থানা শাখা, ইপিজেড থানা শাখা, পাহাড়তলী থানা শাখা,পতেঙ্গা থানা শাখা’র বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন:
এম এন লারমা জুম্ম জাতির জাতীয় উন্মেষ সাধন করেছিলেন, যিনি জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণের লক্ষ্যে কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জুম্ম জনগণের মহান পার্টি জনসংহতি সমিতি গঠিত হয়েছিল যারা পতাকাতলে ১০টি ভিন্ন ভাষাভাষী জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।
বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এম এন লারমার কর্ম, সাধনা, চিন্তার যথার্থ মূল্যায়ন হওয়া দরকার। নিপীড়িত জুম্ম জনগণ এবং ব্যাক্তি এম এন লারমার লড়াইকে একই সূতায় গাঁথা দরকার। এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি উত্তর প্রজন্মের জুম্ম জনগণের লড়াইকে এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে এম এন লারমাকে উপস্থাপনও এই সময়ের দাবি। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় যে, প্রত্যেক প্রজন্মকে সামনে এগোনোর জন্য তার পূর্ববর্তী প্রজন্মের কর্ম, চিন্তা, দর্শনকে ক্রিটিক্যালি বিচার করতে হয় এবং সঠিক বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রমাণিত ভুল ঝেড়ে ফেলে যা নতুন প্রজন্মের জন্য সঠিক, সময়োপযোগী তা গ্রহণ করতে হয়।
তাঁর প্রদর্শিত পথ ও নির্দেশিত নীতিকৌশল আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আদায়ের সংগ্রামে একমাত্র দিশারী হয়ে থাকে। মহান নেতার আত্মত্যাগ তিতিক্ষা যুগে যুগে দেশের প্রতিটি মুক্তিকামীর এক জ্বলন্ত অনুপ্রেরণার উৎসস্থল।
আলোচনা সভায় সমাপনী বক্তব্য নিকোলো চাকমা বলেন এই মহান নেতা বিপ্লবীর আশা, স্বপ্ন, সাধনা,কর্ম, আমাদের পথ দেখায় নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে। এবং মহান নেতার আশার বাণী শুনে বলি, জয় আমাদের হবেই হবে। নিপীড়িত জনগণের জয় হবেই হবে। এম এন লারমাও নিপীড়িত মানুষের ভাগ্যকাশে মুক্তির ধ্রুবতারা হয়ে থাকবেন। শেষান্তে সভাপতি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আন্দোলনে জুম্ম জনগণকে সামীল হওয়ার আহবান জানান সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি শতভাগ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান এবং আলোচনা সভায় মহান নেতা এম এন লারমার সংগ্রামী জীবনের স্মৃতিচারণ করে তার আদর্শে আগামী দিনে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করার শপথ নেয়া হয়।