ডাকাতি ও গনধর্ষণ’ই উদ্দেশ্যঃ খাগড়াছড়ি পুলিশ – প্রতিবাদ অব্যাহত।

পার্বত্য চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাগড়াছড়ি পুলিশের সংবাদ সম্মেলন।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বলপিইয়ে আদামে এক বাড়িতে ডাকাতি ও গনধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার অগ্রগতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবগত করেছে খাগড়াছড়ি পুলিশ। ঘটনায় অংশ নেয়া ৯ জনই পেশাদার ডাকাত। ডাকাতি ও ধর্ষণ দুটিই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। আসামিদের প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। প্রধান আসামি জেলার রামগড়ের তৈচালা গ্রামের মৃত আবুল কাশেম এর ছেলে মোঃ আমিন এর পরিকল্পনায় পুরো ঘটনা সংঘটিত হয়।

চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে আজ রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল আজিজ। সংবাদ সম্মেলনে আরও ব্রিফিং করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ জানান, ঘটনায় অংশ নেওয়া ডাকাত সদস্যদের মধ্যে মূলত জেলে থাকা অবস্থায় নিজেদের মধ্যে পরিচয় ঘটে।

পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিএনজি যোগে খাগড়াছড়িতে পৌঁছায়। আদিবাসী নারীর বাসায় ডাকাতিকালে আসামীরা কেউ কেউ একাধিক বারও ধর্ষণ করে।

গত ২৩ তারিখের ঘটনার পরপরই পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়ে জড়িতদের মধ্যে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে ৭ জনকে করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের কাছ থেকে স্বর্ণ বিক্রয়ের টাকা, লুন্ঠিত টাকা, মোবাইল সেটসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র এবং একটি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন জানান, এর সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন অপরাধীদের পরিচয় অপরাধীই। ঘটনার মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের আটক ও ঘটনার সূত্র উদঘাটন করায় স্বস্থি প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি।

এদিকে পুলিশের হাতে আটক ধর্ষক ৭ ডাকাতকে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষকরা হলোঃ

পুলিশের হাতে আটক ধর্ষক এবং উদ্ধারকৃত সিএনজি

১। মোঃ আমিন ( ৪০),পিতা-মৃত আবুল কাশেম,সাং-তৈচালা পাড়া,থানা রামগড়।

২। মোঃ বেলাল হোসেন (২৩), পিতা-মৃত আকবর আলী,মাতা মালেকা বেগম,সাং কুমিল্লিটিলা (আনসার কাম্পের পাছে), ২ নং পোর ওয়ার্ড,খাগড়াছড়ি পৌরসভা,থানা খাগড়াছড়ি।

৩। ইকবাল হোসেন (২১) পিতা-মোঃ ইমরান হোসেন,মাতা-রহিমা বেগম, সাং-বর পিলাক (ইমরানের বাড়ী),৬নং ওয়ার্ড,০২ নং হাপছড়ি ইউপি, থানা-গুইমারা।

৪। মোঃ আবদুল হালিম (২৮), পিতা-মোঃ হাবিল মিয়া, মাতা-জোসনা বেগম, সাং আদর্শ গ্রাম ( ওমর আলী মেম্বারের বাড়ী), ০১ নং ওয়ার্ড,আমতলী ইউপি, থানা-মাটিরাঙ্গা, বর্তমানে দক্ষিণ গঞ্জপাড়া (শ্রীলংকা মাঠ,রিনা বেগমের বাসা) ০৩ গোলাবাড়ী ইউপি থানা-খাগড়াছড়ি।

৫। মোঃ শাহীন মিয়া (১৯), পিতা আব্দুল কাদের, মাতা-শিরানা বেগম,সাং পশ্চিম বড় পিলাক ( নওশের মাস্টার বাড়ী) ০৬ নং ওয়ার্ড, ০২ নং হাফছড়ি ইউপি, থানা-গুইমারা।

৬।মোঃঅন্তর (২০), পিতা-আহম্মদ উল্লাহ, মাতা-মনোয়ারা বেগম,সাং দারোগা পাড়া (থানার সামনে), ০১ নং পৌর ওয়ার্ড, রামগড় পৌরসভা,থানা-রামগড়।

৭। মোঃ আব্দুল রশিদ (৩৭), পিতা শামসুল হক, মাতা-রোফিয়া বেগম, সাং দক্ষিণ মুসলিমপাড়া (খালেক কমিশনারের বাড়ী) ০৯ নং পোর ওয়ার্ড, মাটিরাঙ্গা পৌরসভা, থানা-মাটিরাঙ্গা ।

এরা খাগড়াছড়ির রামগড়, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা ও খাগড়াছড়ি সদরের বাসিন্দা।

খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ জানান, গ্রেফতার আসামীরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য যে, বুধবার রাত আনুমানিক আড়াইটার সময়ে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের বলপিইয়ে আদামে এক বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতিকালে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই বাড়ির গৃহকত্রীর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে বাংলাদেশ ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম ও মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল যৌথভাবে খাগড়াছড়ির প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে। পরে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানায় টিএসএফ ও বিএমসি সংগঠনের আন্দোলনকারীরা।

অন্যদিকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ইউমেন রিসোর্স নেটওয়ার্ক, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সচেতন ছাত্র-সমাজ ও সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে সারাদেশে অব্যাহত নারী ধর্ষণের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ।

Tags: , , ,

এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই
পুড়ছে মুরারিচাঁদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed

Menu