সিএইচটি ভ্যানগার্ড
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিত বাঘাইছড়ি থানা কমিটির ৭ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত। অদ্য ২৮ জুন ২০২৪ইং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি বাবুপাড়াস্থ জীবঙ্গাছড়া কমিউনিটি সেন্টারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের শুরুতে জাতীয়ে সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সহ-সভাপতি শ্রী সুভাষ কান্তি চাকমা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিদায়ী বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী জ্ঞানজীব চাকমা।
সম্মেলনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন বিদায়ী কমিটির সংগ্রামী তথ্য ও প্রচার সম্পাদক শ্রী জ্ঞানসিন্ধু চাকমা, এবং শোক প্রস্তাব পাঠ শেষে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ের আন্দোলনে আত্মবলিদানকারী এমএন লারমা সহ সকল বীর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়।
বিদায়ী কমিটির সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী রুবেল চাকমার সঞ্চালনায় ও বিদায়ী সভাপতি শ্রী জ্ঞানজীব চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সহ-সভাপতি শ্রী সুভাষ কান্তি চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা শ্রী সোহাগ চাকমা, জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি শ্রী বিমলেশ্বর চাকমা, সহ-সভাপতি শ্রী সুরেশ কান্তি চাকমা, মহিলা সমিতির বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি শেফালী চাকমা, যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রী জগদীশ চাকমা, যুব সমিতি বাঘাইছড়ি থানা কমীতির সংগ্রামী সহ-সভাপতি শ্রী বিনয় চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি শ্রী সুনেন্টু চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মনতোষ ত্রিপুরা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অবস্থা অতীতের যেকোনো অত্যন্ত নাজুক। জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জনসংহতি সমিতির জন্ম। দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও আজকে চুক্তি স্বাক্ষরের ২৭টি বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে, কিন্তু তারপরও রাষ্ট্র চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছেনা। উপরন্তু চুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। দেশ স্বাধীনের পর হতে রাষ্ট্রযন্ত্র জুম্মদের জাতিগত নির্মুলীকরণ ও অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য অঞ্চলে পরিণত করার যে হীন নীলনকশা তা এখনো চলমান রয়েছে। আশির দশকে লক্ষ লক্ষ সেটেলার বাঙ্গালি এনে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটেল করা হয়েছে। এর পরবর্তী উন্নয়নের নামে জুম্মদের ভূমি বে-দখল, জুম্ম নারীদের উপর শ্লীলতাহানি, সহজ-সরল জুম্মদের অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে ধর্মান্তরকরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানো, ঘড়বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, চুক্তিবিরোধী কার্যকলাপ, জুম্ম দিয়ে জুম্ম হত্যার ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক চলমান রয়েছে এবং ১৯০০ সালের শাসনবিধি নিয়ে যে ষড়যন্ত্রসহ নানাভাবে জুম্মদের উপর নিপীড়ন- নির্যাতন জারি রয়েছে। এর বিরুদ্ধে সকল জুম্ম জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর জুম্ম জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে।
শেষে ৭ম বাঘাইছড়ি থানা কমিটির প্যানেল উপস্থাপন ও শপথবাক্য পাঠ করান জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি শ্রী বিমলেশ্বর চাকমা। শ্রী জ্ঞানজীব চাকমাকে সভাপতি, জোসি চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও জ্ঞানসিন্ধু চাকমা সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।